বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ইবোলা ঝুঁকিমুক্ত

পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কেউই ইবোলা ঝুঁকিতে নেই। সচেতনতা হিসেবে শান্তিরক্ষী মিশনে কর্তব্যরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা হ্যান্ডশেক করা থেকে বিরত থাকছেন। এছাড়া, সেনাক্যাম্পে প্রবেশের পূর্বে হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক, প্রতিবার ক্যাম্পে ঢোকার আগে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা, সুনির্দিষ্ট কাজ ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে না যাওয়ার মতো কিছু সতর্কতামূলক নির্দেশনা মেনে চলছেন সেনা সদস্যরা। পুরো পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের জন্য ‘ইবোলা প্রতিরোধ প্রস্তুতি’ জানাতে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল ইনস্টিটিউটে (এএফএমআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কনসালট্যান্ট ফিজিশিয়ান মেজর জেনারেল মো. রবিউল হোসেন, এমবিবিএস ও সেনাবাহিনীর ওভারসিজ ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সালিম আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। এর আগে মেজর জেনারেল মো. রবিউল হোসেনের  নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর এডজুট্যান্ট মেজর জেনারেল আশরাফ আবদুল্লাহ ইউসুফ, মেডিকেল স্পেশালিস্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ-আল ফারুক, হেলথ স্পেশালিস্ট কর্নেল আরিফ হাসান আখতার, প্যাথলজিস্ট লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন সমপ্রতি ঝুুুঁকিপূর্ণ লাইবেরিয়া সফর করেন। এ সময় তারা লাইবেরিয়াতে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান মেজর জেনারেল লিওনার্ড মুরিউকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ পর্যন্ত কোন দেশের সেনাবাহিনী থেকে ওই এলাকা পরিদর্শন করেনি। একমাত্র বাংলাদেশই পরিদর্শন করে। সমপ্রতি তিনি পশ্চিম আফ্রিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেনাপ্রধানের নির্দেশে সামরিক চিকিৎসক প্রতিনিধি দল আফ্রিকা সফর করে। সংবাদ সম্মেলনে রবিউল হোসেন বলেন, সবচেয়ে খুশির সংবাদ হলো, লাইবেরিয়াতে ইবোলা আক্রান্তদের সংখ্যা কমে আসছে। লাইবেরিয়াতে ১৪ বছর গৃহযুদ্ধ হয়েছে। ২০০৩ সালে সেখানে জাতিসংঘ কার্যক্রম শুরু করে। ৫২২ সেনা সদস্যের একটি দল লাইবেরিয়াতে শান্তিরক্ষায় কাজ করছে। এছাড়া, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে প্রায় আট হাজার সেনাসদস্য শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, আফ্রিকাতে কর্তব্যরত সদস্যদের কেউ কেউ এমনও ভেবেছিল তাদের যদি মৃত্যু হয় তাদের দেহাবশেষ দেশে আনা হবে কিনা তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা শুরুতে কিছুটা ভীত থাকলেও ইবোলা বিষয়ে একাধিক সচেতনতামূলক ক্লাস সেই ভীতি দূর করেছে। একই সঙ্গে দেশ থেকে প্রতিনিধি দলের সফর তাদের সাহস জুগিয়েছে এবং তাদের বিষয়ে সেনাসদর যে উদ্বিগ্ন তা-ও প্রমাণিত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.