বহিরাগত ঠেকাতে বাকৃবিতে ক্লাস বর্জন : বিক্ষোভ

বহিরাগতদের সশস্ত্র মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জসিম উদ্দীনের নেতৃত্বে প্রায় ২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে সশস্ত্র মহড়া দেয়া হয়। এসময় তারা বাকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতির নিয়ন্ত্রণাধীন শহীদ শামসুল হক হলের সামনে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে ওই হল ও এর পাশের হলে থাকা ছাত্ররা আতংকিত হয়ে পড়ে। এরপর রাত ৮টার দিকে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বিশৃংখলা ও সশস্ত্র মহড়ার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসির বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে। পরে তারা বহিরাগতদের গ্রেফতারের জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটামসহ মঙ্গলবার ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়ে হলে ফিরে যায়। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সর্বস্তরের ছাত্র জনতার ব্যনারে ক্লাস বর্জন করে বিজয় ৭১-এর পাদদেশে সমাবেশ করা হয়। এরপর তারা বেলা ১টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বাকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা প্রেমাংশু মজুমদার, ইমদাদুল হক, রিন্টু, জিহাদ, অনিক, আজিজুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অতিদ্রুত বহিরাগতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান।
ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জসিম উদ্দীন বলেন, আমি ওই হলের সামনে দিয়ে যাইনি। তবে আমার কিছু নেতাকর্মী ওই হলের সামনে দিয়ে যেতে পারে।
বাকৃবি ছাত্রলীগ রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য নিজেরাই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে আধিপত্য বিস্তার করতে এবং ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে জেলা ছাত্রলীগ এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করেন বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, সোমবারের ঘটনাটি পুলিশের উপস্থিতিতেই ঘটেছে, যা দুঃখজনক। এখন পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে বহিরাগত রনি, সুমন, রুবেল, সোহাগ, মাসুদের নাম জানতে পেরেছি। যারা এ অপকর্মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। জেলা প্রশাসক ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৮ নভেম্বর বহিরাগতরা একটি মাইক্রোবাস এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে। পরে তারা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

No comments

Powered by Blogger.