একাত্তরের এই দিনে

* শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে আহূত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ সংকল্প প্রকাশ করে, স্বাধীন বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাত থেকে মুক্ত না করা পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতারা জানান, শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এ দেশের তরুণসমাজ অস্ত্র ধারণ করেছিল। যে নেতার আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন, সেই নেতার কাছেই অস্ত্র জমা দেবেন।
* ৫৪ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এক যুক্ত বিবৃতিতে ঢাকা নগরীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তার পূর্ণ তথ্য উদ্ঘাটনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানান। তাঁরা বলেন, যারা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এই ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও নৃশংস বর্বরতার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের কোনোমতেই জেনেভা কনভেনশনের ছত্রচ্ছায়ায় থাকতে দেওয়া যেতে পারে না। যুক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- কবি সুফিয়া কামাল, সৈয়দ আলী আহসান, জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সমর দাস, এ বি এম মূসা, কামাল লোহানী, ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।
* বুদ্ধিজীবীরা এই নরপিশাচদের বিচার করার জন্য বিশ্বের প্রখ্যাত আইনবিদ ও মনীষীদের নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের আবেদন জানান। তাঁরা বলেন- ইয়াহিয়া খানের বর্বর সামরিক জান্তা এবং জেড এ ভুট্টো ২৫ মার্চের কালরাতে বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য তারা এক জঘন্য পরিকল্পনার কাজে হাত দেয়, যা ছিল সুপরিকল্পিত গণহত্যার ষড়যন্ত্র এবং তা নৃশংসতার সঙ্গে কার্যকর হচ্ছিল। ইসলামের নামে এবং আলবদর, আলশাম্স, রাজাকার, মুজাহিদ, জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পিডিপি ও অন্য গুণ্ডাপাণ্ডার সহযোগিতায় চালানো হয় সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য ও লোমহর্ষক গণহত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণ। এদের কুকীর্তির বিস্তারিত বিবরণ বিশ্ববাসী এখনো সম্পূর্ণভাবে অবহিত হতে পারেনি এবং এ বিষয়ে সব তথ্য এখনো সংগৃহীতও হয়নি।
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

No comments

Powered by Blogger.