রয়টার্সের বিশ্লেষণ- স্থিতিশীল আফগানিস্তান চায় পাকিস্তান

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে বিবদমান বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করে স্থিতিশীলতার গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। এ জন্য পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনী আফগানিস্তানের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংলাপকে সমর্থন দিচ্ছে।
২০১৪ সালের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের আশঙ্কা, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষে লড়াই শুরু হতে পারে, যা দেশটিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতার প্রভাব পড়বে পাকিস্তান সীমান্তে। আফগান সীমান্তে মোতায়েন পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডাররা সে রকম আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এ জন্য ইসলামাবাদ আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় কাজ শুরু করেছে।
আফগানিস্তান সীমান্তসংলগ্ন পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে কর্মরত একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন আমরা নিজেদের আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণকারী ভাবতাম। এখন আমরা চাই, আফগানরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণকারী নিজেরাই হোক। তাহলে আমরা নিজেদের সমস্যার দিকে মনোযোগ দিতে পারব।’
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি ৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দপ্তরে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে আফগানিস্তান যুদ্ধ শেষ করার পক্ষে দৃঢ় সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে তাঁর অবস্থানের কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্র ইসলামাবাদের ওপর প্রভাব খাটালে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আফগানিস্তান কায়ানি থেকে আরও সহায়তা পেতে পারে। কারণ, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটিতে স্থিতিশীলতা দেখতে চায় ওয়াশিংটনও। আন্তর্জাতিক সমালোচনা এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থিতিশীল আফগানিস্তান প্রয়োজন।
তবে আফগান কর্মকর্তারা স্থিতিশীল আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তানের সহায়তার উদ্যোগ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তাঁদের অভিযোগ, পাকিস্তান তালেবানগোষ্ঠীকে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
পশ্চিমা কূটনীতিকেরা কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের উদ্যোগ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও এখন বিশ্বাস করছেন, পাকিস্তান আসলেই আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা চায়। ইউরোপীয় একটি দেশের কূটনীতিক বলেন, পাকিস্তানের উদ্যোগ থেকে মনে হচ্ছে, আসলেই তারা স্থিতিশীল আফগানিস্তান চায়।

No comments

Powered by Blogger.