সন্তানের ঝগড়ায় মা বাবার হস্তক্ষেপ নয়

ভাইবোনদের মধ্যে মনোমালিন্য কিংবা ঝগড়া পরবর্তী জীবনে তাদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা সৃষ্টি করে। কিন্তু সেই ঝগড়ায় মা-বাবার হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। কারণ এতে সন্তানদের মানসিক ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
এমনটিই দাবি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
গবেষকদের মতে, মা-বাবা আগে থেকেই বাড়িতে কিছু নিয়ম রাখতে পারেন যা তাদের মধ্যকার বিতর্ক কমিয়ে দেবে। গবেষণা নিবন্ধটি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়েছে।
মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিকোল কাম্পিয়ন-বারের নেতৃত্বে একদল গবেষক ১৪৫ জোড়া ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ভাইবোনের মধ্যে এক বছর ধরে গবেষণাটি পরিচালনা করেন। তাদের মধ্যকার বিতর্কের বিষয়গুলো বারবার জানা হয়। এতে দেখা যায়, ঝগড়ার বিষয়গুলো মূলত দুই ধরনের। এগুলো হলো কাজ বা দায়িত্ব এবং ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে। কার দায়িত্ব কী ও সে কাজটি করল কি না এটি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তেমনি একজনের ব্যবহারের জিনিস অপরজন না জানিয়ে ব্যবহার করলেও ঝগড়া হয়। গবেষকেরা তাদের এই ঝগড়ার তথ্য সংগ্রহের এক বছর পর এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁরা ওই ভাইবোনেদের মধ্যে উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা দেখতে পান।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, ভাইবোনদের মধ্যে বয়সের তারতম্য বেশি থাকলে আত্মমর্যাদা বেশি থাকে, অপরদিকে কাছাকাছি বয়সের ক্ষেত্রে এই হার কম।
গবেষকেরা সন্তানদের ব্যক্তিগত বিষয়ে (যেমন: ডায়েরি) মা-বাবার হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে তাদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
তবে গবেষকেরা আরও বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে মা-বাবার হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন হয়ে উঠতে পারে। যেমন: সন্তানের জন্য কিছু নিয়ম বেঁধে দিতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজ করতে হবে। যেকোনো সময়ে ভিডিও গেম খেলা যাবে না। এই নিয়মগুলো তাদের মধ্যকার ঝগড়া কমিয়ে দেবে।
তবে সন্তানদের মধ্যকার ঝগড়া যদি সহিংসতার পর্যায়ে চলে যায় সে ক্ষেত্রে সমাধানে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম বলে মনে করেন গবেষকেরা। টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.