মালালার ওপর হামলা ইসলামবিরোধী

পাকিস্তানের শিশু অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর তালেবানের বর্বরোচিত হামলা ইসলামবিরোধী। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের অন্তত ৫০ জন ইসলামি চিন্তাবিদ এ ফতোয়া দিয়েছেন। ডন নিউজের খবরে গতকাল এ খবর প্রকাশিত হয়।


লাহোরে দেওয়া এ ফতোয়ায় ইসলামি চিন্তাবিদেরা বলেন, তালেবান নেতারা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং শরিয়ার মূল অনুশাসন থেকে তা বিচ্যুত। তালেবান বিপথগামী হয়েছে এবং তাদের মনমানসিকতা অজ্ঞতায় ভরা।
ইসলামি চিন্তাবিদেরা বলেন, ইসলাম নারীর জ্ঞানার্জনে বাধা দেয়নি। মালালার ওপর হামলা করে তালেবান ইসলামের সীমা লঙ্ঘন করেছে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) জানমাল রক্ষার দায়িত্বকে কাবা শরিফ রক্ষার দায়িত্বের চেয়েও বেশি পবিত্র মনে করতেন। একজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা সমগ্র মানবতাকে হত্যার শামিল। তবে ফতোয়ায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ইসলাম ও পাকিস্তানের শত্রু। যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো ধরনের সহায়তা শরিয়ার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
ধর্মের ভালোর জন্য নারীকে হত্যা করার যে ব্যাখ্যা তালেবান দিয়েছে, এর জবাবে ইসলামি চিন্তাবিদেরা ফতোয়ায় বলেন, ইসলাম নারী হত্যা তো দূরের কথা, স্বধর্ম ত্যাগী নারীকে হত্যার বিষয়টিও অনুমোদন করে না।
জাতীয় শান্তি পদক পাওয়া ছোট্ট মেয়ে মালালাকে হত্যাচেষ্টা দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তুলেছে। এ ঘটনায় পাকিস্তানের সরকার, রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ নিন্দা জানিয়েছে।
এ হামলার পক্ষে সাফাই গেয়ে ইসলামি শরিয়ার কথা উল্লেখ করে গত বুধবার নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান একটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে সংগঠনটি বলে, তাঁরা নারীর ওপর হামলায় বিশ্বাস করে না। তবে যারা ইসলাম ও শরিয়ার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়, শরিয়া অনুযায়ী তাদের হত্যা করা যায়।
সোয়াতে তালেবানদের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়ে তিন বছর আগে বিবিসিতে ব্লগ লিখে আলোচনায় আসে মালালা। সে সময় তালেবানরা ওই উপত্যকায় মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

No comments

Powered by Blogger.