ছাত্র পেটানো পুলিশ কর্মকর্তা শুধু কৈফিয়ত দেবেন!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পেটানো সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবুল হাসনাতের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত বুধবার প্রগতিশীল ছাত্রজোটের মিছিলে হামলার ঘটনায় ‘অপরিণত আচরণের’ জন্য তাঁর কাছে শুধু লিখিত কৈফিয়ত চেয়েছে মহানগর পুলিশ প্রশাসন।


রাজশাহী মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করলেও নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা মতিহার অঞ্চলের এসি হাসনাতের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি।
এসি হাসনাতকে অপসারণের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ফেডারেশনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা নগরে মিছিল করেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে পুলিশ প্রশাসন ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভুল-বোঝাবুঝির ফলে বুধবার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। বৈঠকে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ মীমাংসা হয়ে গেছে।’
বৈঠকে উপস্থিত থাকা ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক উৎসব মোসাদ্দেক বলেন, ‘বৈঠকে পুলিশ আমাদের কাছে সরি বলেছে। আমরা এসি আবুল হাসনাতের অপসারণ চাই।’
শিক্ষানবিশ সময় পার করেই ছাত্র পেটানো: পুলিশ কর্মকর্তা আবুল হাসনাতের বাড়ি পাবনায়। ২৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে যোগ দেন পুলিশ ক্যাডারে। সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে শিক্ষানবিশ সময় শেষ করে প্রথমেই যোগ দেন রাজশাহী মহানগর পুলিশে। দায়িত্ব পান মতিহার অঞ্চলের সহকারী কমিশনারের। সেই হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর কর্ম এলাকার মধ্যে পড়ে।
বুধবার প্রগতিশীল ছাত্রজোট ক্যাম্পাসে মিছিল বের করলে বাধা দেন এসি হাসনাত। তিনি ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনের গলা ধরে মিছিল থেকে বের করে আনেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির জেলা শাখার সদস্যসচিব দেবাশীষ রায় এসির কাছ থেকে সোহরাবকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। হাসনাত এক সহকর্মীর কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দেবাশীষের জামার কলার ধরে পেটান। পরে মিছিলে থাকা ছাত্রদেরও লাঠিপেটা করেন। এরপর তাঁর নির্দেশে পুলিশ চার ছাত্র ও দেবাশীষকে সিনেট ভবনের পাশে তাঁবুর কাছে নিয়ে যায়। সেখানে এক পুলিশ সদস্য দেবাশীষকে ধরে রাখেন আর চড়-থাপড় ও কিল-ঘুষি মারেন এসি হাসনাত। পরে ওই পাঁচজনকে মতিহার থানায় নেওয়া হয়। চার ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চৌধুরী মুহাম্মদ জাকারিয়া লোক পাঠিয়ে ছাত্রদের ছাড়িয়ে আনেন।
কথা বলতে এসি আবুল হাসনাতের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

No comments

Powered by Blogger.