বিশেষ সাক্ষাৎকার-সংবিধানের ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার দরকার by মওদুদ আহমদ

সংসদ সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৪ মে। তিনি বাংলাদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, উপরাষ্ট্রপতি এবং আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ে লিখে থাকেন। ১৯৯৭ সালে তিনি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন।


তাঁর লিখিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ: কনটেমপোরারি ইভেন্টস অ্যান্ড ডকুমেন্টস, বাংলাদেশ: স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা, বাংলাদেশ: শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল।
 সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান

প্রথম আলো  সপ্তম সংশোধনী-সংক্রান্ত রায়ের পরে আপনি বলেছেন যে সরকারের সামনে এই রায় বাস্তবায়ন একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। আপনি কি কোনো পরামর্শ দেবেন যে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের কী করা উচিত?
মওদুদ আহমদ  সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমার পরামর্শ চান না। খামোখা পরামর্শ দিতে যাব কেন?
প্রথম আলো  আপনার দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে। সুতরাং আপনি পরামর্শ দিলে সেটা নিশ্চয়ই জনগণ যাচাই করার সুযোগ পাবে।
মওদুদ আহমদ  আমি এ নিয়ে যা বলেছি, সেটা আমি পুনর্ব্যক্ত করতে পারি। পঞ্চম সংশোধনী রায়ের আদলে সপ্তম সংশোধনীর রায় এসেছে। তবে এটা এখনই চূড়ান্ত নয়। এটা আপিল বিভাগে যাবে। তারপর এই রায়ের ভাগ্য চূড়ান্ত হবে। তবে পঞ্চম সংশোধনী ও সপ্তম সংশোধনীসংক্রান্ত রায় বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের। এটা এখন এত সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। কারণ বিষয়গুলো অতীতের। আর ভবিষ্যতে সামরিক শাসন বন্ধ করার জন্য সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেটা দেখতে আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করব। তাদের এখন বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তারা সংবিধান সংশোধনও করতে যাচ্ছে। সুতরাং এই সংশোধনীতে সংসদের সামনে তারা কী ধরনের সংশোধনী প্রস্তাব করে, এটা মনে হয় দেশবাসী জানতে চাইবে।
প্রথম আলো  বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২৪ ধারায় বৈধ সরকার উৎখাতের দায়ে নির্দিষ্টভাবে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নতুন করে আইন তৈরির কথা উঠেছে—
মওদুদ আহমদ  আমি যেটা বলার বলে দিয়েছি। এ বিষয়ে বেশি বলব না।
প্রথম আলো  আদালত এখন আইন প্রণয়নের কথা বলছেন। তাহলে?
মওদুদ আহমদ  আইন করেই তো করতে হবে। সংবিধান সংশোধন করতে হলে সংবিধান সংশোধনের যে পদ্ধতি সংবিধানে দেওয়া আছে সেই অনুযায়ী সংশোধনীগুলো আনতে হবে এবং আইন প্রণয়ন করতে হবে।
প্রথম আলো  জাতীয় রাজনীতিতে উচ্চ আদালতের এই দুটো রায়ের তাৎক্ষণিক তাৎপর্যকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মওদুদ আহমদ  আমি এ বিষয়ে আর বলব না। যা বলার বলেছি। এটাই বলব, সরকারের জন্য এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কীভাবে তারা বাস্তবায়ন করবে—এটা সহজ নয়, কঠিন কাজ। তারা এটা বাস্তবায়ন করার জন্য কী ধরনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আনে, সেটা আগে দেখতে দিন। তারা একটা কমিটি করেছে। আমরা তাদের প্রস্তাব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
প্রথম আলো  বাংলাদেশ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ দিয়ে ফ্লোর ক্রসিং বন্ধ করা আর সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা ন্যস্ত থাকার মধ্যে সম্বন্ধ আছে। আর সেটাই একটা বিরাট সমস্যা তৈরি করেছে; ব্যক্তিবিশেষকে স্বৈরতান্ত্রিক করেছে। দুই বড় দলের গঠনতন্ত্রের আলোকে ব্যাখ্যা করুন।
মওদুদ আহমদ  দলের গঠনতন্ত্র যা-ই থাকুক না কেন, সংবিধানে যেটা আছে সেটাই প্রণিধানযোগ্য; তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সংবিধানই কার্যকর হবে। ৭০ অনুচ্ছেদ সংবিধানে বহাল থাকুক, তা আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না। তবে এর প্রয়োজন ছিল। এবং এখনো অনেকে মনে করেন, এর প্রয়োজন আছে। কারণ আমাদের দেশে এখনো সে ধরনের গণতন্ত্র স্থিতিশীল হয়নি। আমাদের দলের গণতন্ত্রের যে চর্চা, তা আমরা সবে শুরু করেছি। সুতরাং এখানে সময় লাগার কথা। উপরন্তু এটা দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করবে; বিশেষ করে, তাদের নেতৃবৃন্দের ওপর—তাঁরা ৭০ অনুচ্ছেদটা আদৌ রাখতে চান কি না, যদি চানও তাহলে সেটা কীভাবে রাখবেন। এমন বিধান ভারতের আগে ছিল না, পরে তারা নিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলব, এটা বর্তমান সরকারের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করবে। তারা বর্তমান রূপে ৭০ অনুচ্ছেদ অব্যাহত রাখবে কি না, বর্তমান সরকার কীভাবে দেখছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম আলো  বলা হয়ে থাকে, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র বিএনপির তুলনায় অধিকতর গণতান্ত্রিক। একজনের হাতেই সব ক্ষমতা বিএনপির গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীভূত।
মওদুদ আহমদ  এটা ঠিক নয়। দুটো দলেরই গঠনতন্ত্র মোটামুটি একই রকমের। দুটোতেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। আওয়ামী লীগে বেশি কার্যকরভাবে রয়েছে সেটা ঠিক নয়। মূলত কী দাঁড়ায় সেটাই দেখুন, গঠনতন্ত্রের যা-ই থাকুক না কেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতা যদি নেত্রীকে দিয়ে দেওয়া হয়, তা আওয়ামী লীগ বলেন আর বিএনপি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তো তাঁরা ক্ষমতা পেয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কী হয়েছিল। সমস্ত ক্ষমতা সভানেত্রীর ওপর দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিএনপিতেও তা-ই হয়েছে। সমস্ত ক্ষমতা চেয়ারপারসনকে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শুধু তারেক রহমানের নির্বাচন ছাড়া। তারেক রহমানের নির্বাচনটা সরাসরিভাবে হয়েছে। কাউন্সিলররা সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করেছেন।
প্রথম আলো  রাজনীতিতে এই প্রবণতা কেন? তাহলে কি আমাদের সামাজিক সংস্কৃতিতে গণতন্ত্রের ঘাটতি আছে। আমরা কি এখনো গোত্রভিত্তিক সমাজে আবদ্ধ হয়ে আছি?
মওদুদ আহমদ  না, তা নয়। একটা ক্রান্তিকাল যাচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য। আমরা যদি গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে এটা একটা সময় আসবে, একটা উন্নত অবস্থা ধারণ করবে। তখন হয়তো এ রকমের অবস্থা আর থাকবে না। তখন ক্ষমতা ও দায়িত্ব অধিকতর ভাগাভাগি হবে নেতৃবৃন্দের মধ্যে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুটো দলে একইভাবে দুজন অত্যন্ত প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় নেত্রী আছেন। তাঁদের ক্ষমতাই সবচেয়ে অধিক, তাতেও সন্দেহ নেই। এবং এই ক্ষমতাটা আমরা নিজেরাই দিচ্ছি।
প্রথম আলো  বাহাত্তরের সংবিধানের প্রশংসা আপনার মুখেও শুনেছি। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দিকে তাকিয়ে সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা শুধু তাঁর হাতেই ন্যস্ত করা হয়েছিল। সেই ধারা আজও চলছে। আমরা আর বেরোতে পারলাম না।
মওদুদ আহমদ  দেখুন, এটা কিন্তু এতটা সহজভাবে দেখা ঠিক নয়। এটা ঠিক যে বাহাত্তরের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার একটা পটভূমি আছে। পাকিস্তানের আলোকে দেখতে হবে। আমাদের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত তিক্ত। রাষ্ট্রপতির হাতে জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সংসদ বাতিলের ক্ষমতা রাখার অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। অনেকে বলেন, ক্ষমতার একটা ভারসাম্য থাকা উচিত। রাষ্ট্রপতির হাতে কিছু ক্ষমতা থাকা উচিত।
প্রথম আলো  তার মানে আপনি বলেন না; আপনি মনে করেন যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা উচিত নয়?
মওদুদ আহমদ  আমি এটা বলছি তখনকার (বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন) প্রেক্ষাপটে।
প্রথম আলো  শেখ মুজিবের হাতে সব ক্ষমতা রাখা তখন ঠিক ছিল?
মওদুদ আহমদ  সেটা ঠিক ছিল।
প্রথম আলো  আপনি কি কোনো একটি লিখিত সংবিধান দেখাতে পারবেন, যেখানে সংসদীয় ব্যবস্থা আছে অথচ প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছে? উত্তর না হলে কি মানবেন যে আমরা একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপে এসে গেলাম?
মওদুদ আহমদ  নির্বাহী ক্ষমতা এক জিনিস। তবে বাহাত্তরের সংবিধানে মন্ত্রিসভার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল—
প্রথম আলো  তাতে লাভটা কী হলো। আপনি প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে বিচ্ছিন্ন করলেন। নির্বাহী ক্ষমতাটা ব্যক্তি-প্রধানমন্ত্রীকে দিলেন। অথচ এটা থাকবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার কাছে। এবং সেই মন্ত্রিসভা যৌথভাবে জবাবদিহি করবে সংসদের কাছে।
মওদুদ আহমদ  আপনি সেটা ঠিকই বলেছেন, সংবিধানে এটাই লেখা আছে। কিন্তু কোনো সংবিধানই তো পূতপবিত্র নয়। কেন প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার কারণ সমাজটা পরিপক্ব নয় (সফট সোসাইটি)। সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে ক্ষমতার বিতরণ যদি না থাকে, তাহলে সরকারে অস্থিতিশীলতা আসতে পারে।
প্রথম আলো  তাহলে আপনি কি বলবেন যে সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য বাহাত্তরেই ৭০ অনুচ্ছেদ আনা হলো। স্থিতিশীলতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে স্বৈরতান্ত্রিক করা হলো। একানব্বইয়ে আপনারা ৭০ অনুচ্ছেদে আরও কঠোরতা আনলেন, লাভটা কী হলো। ৩৯ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখলাম? এসব কি স্থিতিশীলতা দিয়েছে? আমরা কি পাকিস্তানি সামরিকায়ন থেকে দূরে থাকতে পেরেছি?
মওদুদ আহমদ  এটাই যদি বিবেচ্য বিষয় হয়, তাহলে আমি বলছি, ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনার সঙ্গে একমত। কিন্তু যখন আমি দলীয়ভাবে চিন্তা করি, তখন দলের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চিন্তা করতে হয়। তখন আমাকে বিষয়টি অন্যভাবে দেখতে হয়। তবে আমি বলব, আমাদের জন্য এখন একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে।
প্রথম আলো  আশা করি, আপনি বলবেন যে নামকাওয়াস্তে সংবিধান সংশোধন নয়, একটা ব্যাপকভিত্তিক সংবিধান সংস্কার দরকার।
মওদুদ আহমদ  ঠিক তাই। সংবিধানের অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। যেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনার সময় ও সুযোগ এসেছে। কারণ বর্তমান সরকার সংস্কারের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রথমত, আপনি বললেন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা। আর দ্বিতীয়টা বললেন অনুচ্ছেদ ৭০। এগুলো অনেক উন্নত দেশের তুলনায় অগণতান্ত্রিক। আরেকটি বিষয় হলো, সংসদীয় ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের জবাবদিহি কোথায় থাকবে। মূল সংবিধানে ছিল ইম্পিচমেন্ট বা অভিশংসন। অর্থাৎ এই ক্ষমতা ছিল সংসদের কাছে। বিচার বিভাগের জবাবদিহি ছিল সংসদের কাছে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেহেতু রাষ্ট্রপতি-পদ্ধতি অব্যাহত রাখলেন, শুধু তিনি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা নিয়ে আসলেন। যেহেতু রাষ্ট্রপতির পদ্ধতি ছিল, তাই তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সংযোজন করলেন; ১৯৬২ থেকে আনলেন কিন্তু এখন এটা দূর করতে বাধা কোথায়।
প্রথম আলো  তাহলে আপনি নির্দিষ্ট করে বলছেন যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ব্যবস্থা বিলোপ করে অভিশংসনে ফিরে যাওয়া উচিত।
মওদুদ আহমদ  সংসদীয় ব্যবস্থায় যাঁরা বলছেন যে তাঁরা মূল বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে চান; তাহলে তো তাঁদের সেটাও করতে হবে। এবং দুনিয়ার যেসব দেশে সংসদীয় ব্যবস্থা রয়েছে—ভারত, কানাডা যেখানেই আছে—সেখানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের বিষয়ে ক্ষমতা দেওয়া আছে সংসদকে।
প্রথম আলো  ১৯৫৬ সালের সংবিধানেও তা-ই ছিল। এমনকি রাষ্ট্রপতি-পদ্ধতির দেশেও এই ক্ষমতা সংসদের কাছেই থাকে। বাষট্টিতে আইয়ুব খান এটা ঢোকালেন। এখানেও আমরা ব্যতিক্রম।
মওদুদ আহমদ  ঠিকই বলেছেন, সুতরাং প্রধানমন্ত্রী কিংবা ৭০ অনুচ্ছেদ নয়, আরও অনেক বিষয় রয়েছে।
প্রথম আলো  আমাদের কি তবে একটা ব্যাপকভিত্তিক সংবিধান সংস্কার দরকার?
মওদুদ আহমদ  আমি আপনার সঙ্গে একমত। সংবিধানের যেসব জায়গায় অসংগতি আছে, অগণতান্ত্রিক বিষয় আছে, কোথাও হয়তো পূর্ণতা নেই, কোথাও অস্পষ্টতা বা দ্ব্যর্থকতা রয়েছে সেসব বিষয় চিহ্নিত হওয়া দরকার।
প্রথম আলো  অনেকের মত হলো, তাড়াহুড়া না করে একটা সংবিধান রিভিউ কমিশন হওয়া উচিত। এবং যাতে সেটা দীর্ঘ মেয়াদে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
মওদুদ আহমদ  সংবিধান একটি মৌলিক দলিল। এটা এককভাবে করা ঠিক নয়। আমি একটা কথা বলতে পারি, দলীয়ভাবে যদি সংবিধান সংশোধন করা হয়, তাহলে সেই সংশোধনী টিকবে না।
প্রথম আলো  পঞ্চম সংশোধনী পুরোপুরি বাতিল হয়নি। বরং জিয়াউর রহমানের কিছু সামরিক ফরমানের প্রশংসাও করা হয়েছে। আবার জিয়াকে অবৈধ জবরদখলকারীও বলা হয়েছে। আপনি কীভাবে দেখছেন?
মওদুদ আহমদ  রায়ের মধ্যে কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে। সেটা আপিল বিভাগও বলেছেন। তাঁরা কিছু মার্জনা করেছেন, কিছু করেননি। তখন সামরিক ফরমান ছাড়া আমরা আর কী করে গণতন্ত্র আনতে পারতাম? কী করে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আসতে পারত? বাকশাল কী করে বিলোপ হতো? যেহেতু সংসদ ছিল না, তাই সামরিক ফরমানই ছিল ভরসা। সে কারণেই আদালত ফরমান দিয়ে সংবিধান সংশোধনকে অবৈধ বলেও এসব কাজকে মার্জনা করেছেন। তাই অনেকে এটাকে অসামঞ্জস্য মনে করলেও আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে বলে মনে করি।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
মওদুদ আহমদ  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.