ওদের রঙিন ঈদ by শারমিন নাহার

বছর ঘুরে আসে ঈদ। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ঈদের এই খুশি আর আনন্দ সবার। তার পরও ঈদের এই খুশির আমেজ ছোটদের যেন একটু বেশিই। ঈদের কেনাকাটাও শুরু হয় বাসার ছোট্টমণিদের দিয়েই।ঈদের বাজার সবে জমে উঠেছে। ছোট্টমণিদের জন্য বুটিক হাউস ও শপিংমলগুলো নানা আয়োজন করেছে একটু আগেভাগেই।


ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ের বিপণন বিভাগের প্রধান ফারজানা হালিম হাই বলেন, আড়ং বরাবরই বাচ্চাদের আগ্রহ ও পছন্দের জায়গাটাকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক ডিজাইন করে থাকে। এবার মেয়ে-বাচ্চাদের জন্য বিশেষভাবে করা হয়েছে ঘাগরা ও চোলি; সঙ্গে রয়েছে কাজ করা ওড়না। যেহেতু এখন গরমের তীব্রতা বেশি, তাই পোশাকগুলো করা হয়েছে সুতি কাপড়ে। তবে কিছু কিছু সিল্কের পোশাকও রয়েছে।
উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে কাপড়ে ব্যবহার করা হয়েছে নানা রং। সঙ্গে সঙ্গে এমব্রয়ডারি, ঘণ্টা আর সুতার কাজও রয়েছে। অন্যদিকে সুতির রকমারি ফ্রক ও সালোয়ার-কামিজ তো আছেই। ঘাগরা, চোলির দাম পড়বে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। সালোয়ার-কামিজ আর সুতির ফ্রক পাবেন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে আড়ংয়ে ছেলে-শিশুদের ঈদের পোশাক আনা হয়েছে দুই থেকে সাত আর আট থেকে ১৫ বছর—এই দুই বিভাগে। হাফশার্ট, ফতুয়ার সঙ্গে হাফপ্যান্ট আর থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট রয়েছে। ছেলে-বাচ্চার পোশাকের থিম হলো এলিয়েনস মানে ভিনগ্রহবাসী। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বর্ণ ও পশু-পাখির ছবির পোশাক। এবার ছেলে-বাচ্চাদের পোশাকেও বাদ যায়নি রঙের বহু ব্যবহার। এর সঙ্গে এমব্রয়ডারির কাজও রয়েছে। ঈদের মূল আর্কষণ হলো পাঞ্জাবি। তাই হাতের কাজ করা সুতি আর সিল্কের পাঞ্জাবি পাবেন আড়ংয়ে। প্যান্টসহ শার্টের দাম পড়বে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, শুধু প্যান্ট ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, সিল্কের পাঞ্জাবি মিলবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে।
‘তারায় তারায় খচিত’ এই থিম নিয়েই সাদা-কালো আয়োজন করেছে এবারের ঈদের ফ্যামিলি প্যাকেজ। এমনটাই বললেন সাদা-কালোর স্বত্বাধিকারী ও ফ্যাশন ডিজাইনার তাহসিনা শাহিন। এখানে বাবা-মা ও শিশুদের জন্য ‘তারায়’ খচিত করে পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে। এ ছাড়া মেয়ে-বাচ্চার জন্য আছে জমকালো সালোয়ার-কামিজ। এগুলো কোনোটা লেইস বসানো আবার কোনোটা ব্লকের। এগুলোর দাম পড়বে আকারভেদে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ছেলে-শিশুর শেরওয়ানি, ফতুয়ার দাম পড়বে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। পাঞ্জাবি আকারভেদে ৪৫০ থেকে ১০০০ টাকা। ফ্যাশন হাউস টেক্সমার্টের শিশুদের পোশাকের ডিজাইনার জেসি বলেন, ‘গরম আর শিশুর ত্বকের কথা মাথায় রেখে এবারের বেশির ভাগ পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে সুতি কাপড়ের মধ্যে। ছয় মাস থেকে ১৩ বছরের বাচ্চাদের পোশাকের ডিজাইন করেছি। মেয়ে-বাচ্চার জন্য ফ্রক, টপ্স আর এর সঙ্গে মিল রেখে আছে ক্যাপ্রি আর জিনসের প্যান্ট। এ ছাড়া এবারে স্কার্টের মাঝে ভিন্নতা আনার চেষ্ট করেছি। উৎসবের আমেজটা পোশাকের রঙের মাঝে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। মেয়ে-বাচ্চার পোশাকে বেগুনি, গোলাপি আর সবুজ—এই তিনটি রং ব্যবহার করেছি।’ টপেসর দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ফ্রক আর স্কার্টের দাম পড়বে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর ছেলে-বাচ্চাদের জন্য আছে হাফশার্ট, চেকশার্ট, জিনস ও গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। দাম পড়বে ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে।
ছোট পাখি ছোট পাখি কিচিমিচি ডাকি ডাকি—এমন ছড়া ব্যবহার করা হয়েছে কেক্র্যাফটের ছেলে-বাচ্চাদের ফতুয়াগুলোতে। এ ছাড়া হাতি-ঘোড়ার মোটিফসহ পাঞ্জাবিও পাওয়া যাবে। দাম পড়বে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। মেয়ে-বাচ্চার জন্যও রয়েছে কেক্র্যাফটের নানা আয়োজন। ছোট্টমণির ঈদ আনন্দ আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতেই কেক্র্যাফট আয়োজন করেছে শাড়ির। সুতির মধ্যেই ডিজাইন করা হয়েছে শাড়িগুলো। কোনোটা টাইডাই করা, কোনোটা আবার শুধু তাঁতের ওপর ডিজাইন করা। দাম পড়বে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।
আর ফ্যশন হাউস নগরদোলার ঈদের বিশেষ আয়োজনে রয়েছে ছোট্ট শাড়ি সেট। এই সেটের মধ্যে ডিজাইন করা ব্লাউজসহ কুচি সেট করা শাড়ি পাওয়া যাবে। কুচি খুলে যাওয়ার বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না শিশুকে। এই শাড়ির দাম পড়বে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা।
ফ্যাশন হাউস রং-এ আছে ছোট্ট সোনামণির রঙিন সালোয়ার-কামিজ। এতে ব্লক আর লেইসের কাজ করা। আর ছেলে-বাচ্চার জন্য বাহারি ডিজাইনের হ্যান্ডপেইন্টের পাঞ্জাবি আর ফতুয়া তো আছেই। এগুলোর দাম পড়বে ৩৫০ থেকে ১৫০০ টাকা।
ঈদকে ঘিরেই নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে চলে এসেছে শিশুদের পছন্দের সুপারম্যান ও স্পাইডারম্যানের ছবিসংবলিত পোশাক। নিউমার্কেটের কিছু দোকানে মিলবে এগুলো। দাম পড়বে ৬০০ টাকা।

No comments

Powered by Blogger.