টেলিফোনে নাগরিক মন্তব্য-গরিবের স্বার্থে আরও পদক্ষেপ নিন

গত ৭ জুন বিরোধী দলবিহীন সংসদে আগামী অর্থবছরের (২০১২-১৩) জন্য বিশাল ব্যয়ের বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা, যা আগের বাজেটের তুলনায় ২৯ হাজার কোটি টাকা বেশি।


এবারের বাজেটের ভালোমন্দ বিষয়ে মতামত জানিয়েছেন পাঠকরা।
গ্রন্থনা একরামুল হক শামীম ও মাহফুজুর রহমান মানিক

মোঃ আমির হোসেন
চাল ব্যবসায়ী, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল
সরকার যে বাজেট দিয়েছে তা আসলে গরিবের জন্য খুব একটা সুবিধার হয়নি। আমি অনুরোধ করব কৃষকের দিকে যেন সরকার একটু নজর দেয়।
মোঃ সোহান ভুঁইয়া
চাকরিজীবী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। এই বাজেট আসলে রাজনীতিবিদদের জন্য, সাধারণ নাগরিকদের জন্য বাজেট হয়নি।
লোকমান উদ্দিন লোদী
ব্যবসায়ী, সিলেট
এটা নির্বাচনমুখী বাজেট হয়েছে। এত বড় বাজেট, কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়েই শঙ্কা রয়েছে। এই বাজেটে করের আওতা বাড়ানো হয়েছে। মোবাইল ফোনের বিলের ওপর কর, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মুনাফার ওপর উৎসে করের বিধান মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য ভালো ব্যবস্থা নয়। গত এক বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে; কিন্তু সর্বনিম্ন করযোগ্য আয় এক লাখ ৮০ হাজার টাকাই থেকে গেল!
ফারুক আহমেদ
সাংবাদিক, রাজশাহী
২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করায় জনগণ এর ভালোমন্দ দেখতে পেয়েছে এবং বুঝতেও পেরেছে। তাতে জনগণের জন্য ভালো দিকটাই বেশি হবে। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোটের রায়ে সংসদে পাঠিয়েছে সুখে-শান্তিতে থাকার জন্য। সরকার জনকল্যাণমুখী বাজেট পেশ করেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে জনগণ এর সুফল ভোগ করবে। বর্তমান আওয়ামী লীগ আমলে আমলাবাজরা কোণঠাসা অবস্থায় আছে। ফলে জনগণ শান্তিতে আছে। আমার মনে হয়, সরকারের এই বাজেট জনগণের জন্য ভালো হবে। এই সরকার জনগণের কল্যাণ চায়। জনগণের কল্যাণের জন্য বাজেট পেশ করায় সরকারকে ধন্যবাদ।
এমএ লতিফ মজুমদার
আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা
কালো টাকার পরিমাণ দেড় থেকে দুই লাখ কোটি টাকা। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি ৫২ হাজার কোটি টাকা। তার মানে এক-চতুর্থাংশ কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করলে বাজেটের জন্য বিদেশি লোন লাগে না, ব্যাংক লোন লাগে না।
বাদল চন্দ্র সরকার
রিকশাচালক, কুমিল্লা
সরকার এত টাকার বাজেট করল, কিন্তু এতে আমাদের মতো গরিবদের কী উপকার হবে? যেসব জিনিসের দাম কমানো হয়েছে, সেগুলো কয়জন গরিব মানুষ ব্যবহার করে? বরঞ্চ যেগুলোর দাম বাড়ানো হয়েছে তাতে আমাদের সমস্যা হবে। আমাদের এমপিরা কোটি কোটি টাকার গাড়ি ব্যবহার করেন। তারা গরিবের কষ্ট বুঝবে কীভাবে? বিরোধী দলের আন্দোলনেও গরিব মানুষের দাবি উপেক্ষিত। গরিবের জন্য ভেবে যাতে বাজেট করা হয় তেমন কোনো চাপও তাদের পক্ষ থেকে নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন, কম মূল্যে চাল দেবেন, কৃষকের জন্য সার দেবেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন আমরা দেখতে পারছি না।
জুয়েল সরকার
দোকানদার, কুমিল্লা
এই বাজেটের মাধ্যমে দেশের জনগণের জন্য মঙ্গল হবে না। যাদের অনেক কিছু আছে তাদের জন্য কেবল সুবিধা হবে। আমরা যারা নিম্নবিত্ত তাদের জন্য জীবনযাপন খুব কঠিন হবে। সবকিছুর দামই বাড়ছে!
মোস্তফা কামাল
সমাজসেবী, কুমিল্লা
সার্বিক দিক বিবেচনা করে বলা যায় বাজেট সুন্দর হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খুব প্রয়োজন ছিল। বাজেট একটু বড় হবেই। কারণ, দেশের সকল মানুষের সামনে এখন বড় স্বপ্ন, বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের একটি দেশে পরিণত হবে।
কাজী মাওলানা মোঃ আবুল হাসান
কাজী, শরীয়তপুর
অন্যান্যবারের তুলনায় এবারের বাজেট ভালো হয়েছে। অন্যান্যবার দেখা যেত বাজেটের পর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, এবার তা হয়নি। গরিবের জন্য ভালো বাজেট প্রণয়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
ডা. মোরশেদ আলম
দন্ত চিকিৎসক, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম
বাজেটের আকার ও মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, গরিব গরিবই থাকবে আর সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পকেট ভরবে।
আবদুল মতিন
প্রভাষক, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ
বাজেটে যেমন ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে একই সঙ্গে চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি করা দরকার। জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেতন না বাড়ালে আমাদের চলা কষ্টকর।
মোঃ ফজলুল হক
চাকরিজীবী, ঠাঁটারীবাজার, ঢাকা
এবারের বাজেট একটি উচ্চাভিলাষী বাজেট হয়েছে।
মোঃ শরিফুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
টাকার অঙ্কে এবারের বাজেট সর্বোচ্চ। কিন্তু কথা বলার ওপর যে অতিরিক্ত কর নির্ধারণ করা হয়েছে সেটার কোনো যুক্তি থাকতে পারে? একদিকে ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানো হয়েছে অথচ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অর্থের ওপর কোনো কর নির্ধারণ করা হয়নি। সরকার শিক্ষায় জোর দেওয়ার কথা বললেও বাজেটে শিক্ষা খাতে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
ওয়াদিহ মুরাদ
কবি, স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর
বৃহৎ অঙ্কের বাজেট পেশ করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এখন দেখার বিষয় মুদ্রাস্ফীতি রোধ করার জন্য এ বাজেট কতটা ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা মতে ৪২ থেকে ৮২ শতাংশ কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া ঠিক হয়নি। বাংলাদেশের গরিব জনগণের জন্য নতুন কোনো কর্মসৃজনের সুযোগ এ বাজেটে নেই। আমাদের দাবি, অবশ্যই বাজেটে কৃষকের স্বার্থে এবং সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ অনুদানের ঘোষণা থাকা উচিত।
হারুনুর রশিদ শাহীন
এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা
অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন। এতে 'জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০' বাস্তবায়নে আলাদা কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন এমপিওভুক্তির জন্য এবারও কোনো বরাদ্দ নেই। সামগ্রিকভাবে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে নতুন কোনো পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়নি এবার। পৃথিবীতে যে দেশ যত বড় হয়েছে তারা শিক্ষাকে ব্যবহার করেই। তাই এদিকটায় সরকারের একটু বেশি নজর দিলে ভালো হতো।
পূরবী সরকার
বেসরকারি কলেজ প্রভাষক, টাঙ্গাইল
বাজেটে শিক্ষা খাতে সরকার উন্নতির কথা বলছে। কিন্তু বাজেটে এ বিষয়ে কোনো জোর দেওয়া হয়নি। বেসরকারি শিক্ষকরা এক-দেড় বছর ধরে চাকরি করেও কোনো বেতন পাচ্ছেন না। তারা কীভাবে চলবেন? আমাদের নিয়োগ হয়েছে এক-দেড় বছর আগে, অথচ আমরা এখনও বেতন পাচ্ছি না। ভেবেছিলাম এবারের বাজেটের মাধ্যমে আমরা বেতনটা পাব, এখনও আমরা জানি না বেতন কবে হবে।
মোঃ আলী
চাকরিজীবী, হাজারীবাগ রোড, ঢাকা
বাজেট গরিবের নাগারের বাইরে। গরিব যেভাবে বাঁচে সেভাবে বাজেট করা উচিত। সব জিনিসের দাম বাড়ছে। যারা ঢাকাতে বসবাস করে, ভাড়া থাকে তাদের জন্য জীবনযাপন খুবই কষ্টের। গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়লেই বাড়ি ভাড়া বাড়ে। কিন্তু চাকরিজীবীদের বেতন তো আর বাড়ে না। এমন কিছুতে দাম বাড়ানো উচিত যেখানে গরিব মানুষের প্রয়োজন কম। বাজেট গরিবের নাগালে থাকা উচিত।
কুমারেশ চন্দ্র বিশ্বাস
শ্রমিক, ঝিনাইদহ সদর
ঝিনাইদহ
বাজেটকে ভালো হিসেবেই দেখতে চাচ্ছি আমরা। বাজেট আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়েছে। বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাজেটকে গণমুখী করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারই পারে দেশকে এগিয়ে নিতে। আমরা এই বাজেটের বাস্তবায়ন চাই। কারণ বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমেই গরিব-মেহনতি মানুষের মুক্তি আসবে।
 

No comments

Powered by Blogger.