দ্য গ্রেট স্পঞ্জ রসগোল্লা by নাজিফা তাসনিম

কোরবানি ঈদে আমরা সবাই মিলে ঈদ করতে গেলাম বড় মামার বাড়িতে। ঈদ উপলক্ষে চারটি কোরবানির ছাগল কিনে আনা হলো। আমরা যারা ছোট, তারা সবাই মিলে ছাগলগুলোকে গুঁতিয়ে গুঁতিয়ে পাতা খাইয়ে গাছের সব পাতাই প্রায় শেষ করে ফেললাম।


ঈদের আগে আগে গ্রামের বাড়ি থেকে দুই প্যাকেট কুষ্টিয়ার বিখ্যাত ‘স্পঞ্জ রসগোল্লা’ হাতে নিয়ে চলে এলেন আমার নানা। সবাইকে সাবধান করে নানা বললেন, ‘খবরদার! ঈদের আগে কেউ প্যাকেটে হাত দেবে না। হাত ভেঙে দেব কিন্তু।’
মিষ্টি নিয়ে ফ্রিজে রাখলাম আমি।
পরদিন খুব সকালের দিকে হইচই শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখলাম, ফ্রিজের পাল্লা খোলা। নিচে পড়ে আছে ভাঙা ডিম। ঘরজুড়ে বিশ্রী গন্ধ। পাশেই নানার ওপর আছড়ে পড়েছেন আমার বিশালদেহী বড় মামা।
আমার চিত্কার শুনে অনেকেই বের হয়ে এসেছে। মামাকে টেনে তুলতেই তিনি দৌড় দিলেন (খোঁড়াতে খোঁড়াতে) বাথরুমে বমি করতে। আর নানাকে চাপাচাপির পর তিনি ঘটনা বললেন, ‘তোমরা তো ডায়াবেটিসের জন্য মিষ্টি খেতে দাও না। তাই লুকিয়ে খেতে এসে জিনের সঙ্গে পা বেঁধে পড়ে গেলাম।’ শুনে আমরা আর হাসি চাপতে পারলাম না। কথিত জিন হলেন আমাদের বড় মামা। তারও ডায়াবেটিস আছে। পরে মামাকে বমি করার কারণ জিজ্ঞেস করতেই বেরিয়ে এল ভাঙা ডিমের রহস্য। তিনি অন্ধকারে ঘুমের ঘোরে রসগোল্লা মনে করে ডিমে কামড় দেন। ডিমটি পচা হওয়ায় তিনি তা ছুড়ে ফেলে দেন। আর পরে ভাঙা ডিমের ওপর পা পিছলে নানার ওপর আছাড় খান।
আছাড় খাওয়ার ঘটনায় দুজনেরই পা ভেঙে যায়। এক রসগোল্লার কত ক্ষমতা! তাই সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো আমিও ভাবি,
‘রসের গোলক, এত রস কেন তুমি ধরেছিলে হায়! নানা-মামা তোমায় দেখলেই দূরে পালিয়ে যায়।’
দশম শ্রেণী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, রাজশাহী।

No comments

Powered by Blogger.