বুয়েট : অচলাবস্থার অবসান

শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে হবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিদ্যালয় (বুয়েট) দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান, যার খ্যাতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক। তিন সপ্তাহ ধরে বুয়েটে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকার পর সরকারের নির্বাহী প্রধান প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর অচলাবস্থা নিরসনের যে সংবাদ পাওয়া গেল তা স্বস্তিদায়ক।


একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও। সে ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অচলাবস্থা নিরসনের পথে। উভয় ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী যে উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়েছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৪ মে ২০১২ বৈঠকের পর বুয়েটের শিক্ষকরা ক্লাসে যোগ দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরতরা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও এখন পর্যন্ত সেখানকার অস্থিতিশীলতার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। তবে আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুত সেখানেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং ক্যাম্পাস আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট এক দিনে সৃষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট সবারই সতর্ক থাকা উচিত এমন পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে আর না হয়। বুয়েটের শিক্ষকরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন এর যৌক্তিকতা উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছিল না। যা হোক তবু শেষ পর্যন্ত স্বস্তির যে খবর মিলেছে তাতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ সবাই খুশি। বুয়েট বাংলাদেশের অন্যতম একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার গুরুত্ব ও শিক্ষার গুণগত মানের বিষয়টি দেশের বাইরেও আলোচিত। এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার দায় সবার। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক চিত্র এমনিতেই প্রশ্নবোধক। এর মধ্যে নিত্যনতুন সৃষ্ট সমস্যা সংকটের জাঁতাকলে সার্বিক উচ্চশিক্ষা চিত্রকেই আরো প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। দেশ-জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার স্নায়ুকেন্দ্রগুলো অর্থাৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র যদি বিবর্ণ হয় তাহলে এর বিরূপ প্রভাব বহুমুখী হতে বাধ্য। শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ যেকোনো মূল্যে অক্ষুণ্ন রাখতেই হবে। আমরা যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি তার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ব্যাপকভাবে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়া।
শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ-পরিস্থিতি সুষ্ঠু কিংবা স্থিতিশীল রাখার দায় সরকারেরও। অহেতুক নাক গলানো উচিত নয় এবং এর ফল কতটা বিরূপ হতে পারে এর অনেক নজির আমাদের সামনেই আছে। নিয়মনীতির ভিত্তিতে চললে সব কিছুই সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে চলবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এক দিনের জন্যও ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। শিক্ষা, শিক্ষক কিংবা তৎসংশ্লিষ্ট কারো কিছুই যাতে ব্যক্তি বা মহলবিশেষের মুঠোবন্দি না হয় সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.