সাক্ষাৎকার-প্রধানমন্ত্রী ডাকুক, আমি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করব by নুরুল ইসলাম বিএসসি

প্রথম আলো: চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদলের সঙ্গে আপনি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। অনন্যার পাশে ‘সানোয়ারা সিটি’ নামের একটি হাউজিং প্রকল্পের জায়গা নিয়ে নাকি এই দ্বন্দ্ব? নুরুল ইসলাম বিএসসি: আমার সঙ্গে বাদল সাহেবের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমি তো উনার এলাকা থেকে নির্বাচন করব না।


উনি আসলে এলাকার জামায়াত-শিবিরের লোকজন নিয়ে আন্দোলন করে আমার বিরুদ্ধে মানুষকে উসকে দিচ্ছেন।
প্রথম আলো: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ দলের বৈঠকে আজ রোববার বিষয়টি নাকি আলোচনার জন্য উঠবে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?
নুরুল ইসলাম বিএসসি: প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডাকুক। তারপর আমি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করব।
প্রথম আলো: আপনারা নাকি সাজিয়া বিলের জায়গা দখল করে আবাসিক প্লট বানাচ্ছেন। এতে স্থানীয় লোকজন সাংসদ বাদলের সাহায্য চেয়েছেন। এ কারণে তিনি তাঁদের নিয়ে আন্দোলন করছেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি: আমার ছেলে একটি হাউজিং প্রকল্প করছে। সেখানে অনন্যাসহ আরও দুই-তিনটি হাউজিং প্রকল্প হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। শুধু আমার ছেলের প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এই আন্দোলনের কোনো প্রয়োজন ছিল? বাদল সাহেবের কি উচিত ছিল না এলাকার লোকজন নিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে বসা? সমঝোতায় না গিয়ে তিনি কোন উদ্দেশ্যে আন্দোলন করছেন? আর জায়গার দাবিদার কেউ হলে তাঁরা তো আদালতে যেতে পারেন। বাদল সাহেব আন্দোলনকারীদের আদালতে না পাঠিয়ে কেন উসকে দিচ্ছেন? এটা আসলে কিসের লক্ষণ?
প্রথম আলো: আপনার ছেলে কি আসলে জমি দখল করেছে?
নুরুল ইসলাম বিএসসি: আমার ছেলে কারও জায়গা দখল করে হাউজিং করছে না। আদালতেই সেটা প্রমাণ হবে। তবে উনি (বাদল) আমাদের কাছে দুটি প্লট এবং মোটা অঙ্কের নগদ টাকা চেয়েছিলেন। আমরা সৎভাবে উপার্জন করতে শিখেছি। কাউকে ঘুষ দিয়ে কিংবা কোনো কিছুর বিনিময়ে সুবিধা নেওয়া শিখিনি। এ কারণে উনার প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে আমার ছেলে প্রত্যাখ্যান করে। এরপর উনি আমার ছেলের হাউজিং প্রকল্প এবং আমার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে নিয়ে আন্দোলন করছেন। আর উনি যেভাবে বিষোদগার করছেন তা দুঃখজনক।
প্রথম আলো: আপনার বাবা কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। আপনিও ব্যবসায়ী। উনার স্তরে রাজনীতিবিদ আপনি নন। আপনারা দুজন নিজেদের মধ্যে বিরোধ বা দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করছেন না। তবুও পাল্টাপাল্টি বক্তব্য সূক্ষ্মভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বলুন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি: আমি তাঁকে (মইন উদ্দীন খান বাদল) আক্রমণ করে কিছু বলিনি। ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা শোভন নয়, যা আমি বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আর আমার বাবাকে কাঠমিস্ত্রি বলে তিনি তো কটাক্ষ করলেন। কাঠমিস্ত্রি তো চোর না। তবে আমার বাবা কাঠমিস্ত্রি নয়, রেলওয়েতে চাকরি করতেন। সামান্য চাকিরিজীবী হয়ে আমার বাবা সব ভাই-বোনকে শিক্ষিত করে তুলেছেন।
প্রথম আলো: সাজিয়া বিলের ব্যাপারে সাংসদ বাদল তো বিএনপি ও জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আন্দোলনকারীদের বেশির ভাগ নাকি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত?
নুরুল ইসলাম বিএসসি: ওই এলাকায় যাঁরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের বেশির ভাগ মানুষের এক ইঞ্চি করেও জমি নেই।
এই থেকে বুঝে নিতে হবে কথিত আন্দোলনের উদ্দেশ্য কি? কেন আমার পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁদের উসকে দেওয়া হচ্ছে? আমি সারা জীবন হালালভাবে রোজগার করেছি। কারও সম্পত্তি বা সম্পদ দখল করিনি। আমি আওয়ামী লীগ করি। আমার বিরুদ্ধে বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ উনার পরিবারের সদস্যদের অনেকে দেশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করেন না। উনার চাচা মোজাফফর চিহ্নিত রাজাকার, যিনি একাত্তরে শান্তি কমিটির নেতা ছিলেন।
প্রথম আলো: আপনি শিক্ষকতা করতেন। পরে কাস্টমসে চাকরি করেছেন। কোনো কারণে কি আপনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন? সাংসদ বাদল তো সেই রকম ইঙ্গিত করেছেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি: কাস্টমসের চাকরি ছেড়ে আমি ব্যবসায় এসেছি। ব্যবসায় আমি প্রতিষ্ঠিত। কাস্টমসে আমার চাকরি গেছে কি না সেটা তাঁকে প্রমাণ করতে বলেন।

No comments

Powered by Blogger.