আগামী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে করার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর

দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গতকাল শনিবার গণভবনে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এ ইঙ্গিত দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার স্থানীয় ও উপনির্বাচন মিলিয়ে পাঁচ হাজার ১৭৫টি এলাকায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পেরেছে।


আগে কখনো এ রকম ভালো নির্বাচন হয়নি। তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচনও অবশ্যই অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে পারবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থাকবে। কেউ কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন থাকবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।
বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের নামে তারা ভাঙচুর করবে, গাড়ি পোড়াবে, মানুষ পুড়িয়ে মারবে, তাদের কিছুই করা যাবে না? বিচার করতে গেলেই নাকি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। তাহলে যাকে পুড়িয়ে মারা হলো, তার কি মানবাধিকার নেই?’ তিনি বলেন, ‘নেতাদের গ্রেপ্তারের পর যাঁরা কলাম লেখেন, টক শোতে টিভি একেবারে ফাটিয়ে ফেলেন, মানবাধিকারের কথা বলেন। কিন্তু যখন গাড়িচালককে পুড়িয়ে মারে, গাড়ি পুড়িয়ে দেয়, তখন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় না? কারা এসব কাজে হুকুম দিয়েছে, কে কী নির্দেশ দিয়েছে, সবকিছুরই রেকর্ড আছে। এখন প্রযুক্তি অনেক দূর এগিয়ে গেছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি প্রসঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওনার (খালেদা জিয়া) দুই ছেলেকে পিটিয়ে দেশের বাইরে বের করে দিয়েছে। উনি কি ভুলে গেছেন এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা? তাঁর দুই ছেলেকে কারা উত্তম-মধ্যম দিয়ে দেশছাড়া করেছে? তাঁর দলের নেতার স্ত্রী ও কন্যাকে তখন জেলে নেওয়া হয়েছে। তখন উনি প্রতিবাদ না করলেও আমি করেছি? এত তাড়াতাড়ি এসব তিনি কী করে ভুললেন?’
বিএনপি সেনাবাহিনী নামিয়ে মানুষ হত্যা করে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের সময় দেশে প্রতিদিন খুন ও গুমের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছিল যে সেনাবাহিনী নামিয়ে অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের যাতে বিচার না হয়, সে জন্য ইনডেমনিটি দেওয়া হয়। এরপর র‌্যাব গঠন করে ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করা হয়।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কারণেই ২০০৮ সালের নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছিল। তৃণমূলের নেতারা কখনো বিভ্রান্ত হন না। মাঝে মাঝে কেন্দ্রীয় নেতারা বেতাল হয়ে যান। মাথা গুলিয়ে ফেলেন।
অতীতে বহুবার এ রকম হয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেন না।’
মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, আখতারুজ্জামান চৌধুরী, কাজী জাফর উল্যাহ, মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।

No comments

Powered by Blogger.