ঘুম থেকে চির ঘুমে

দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে দুই মেয়েকে নিয়ে নিজ ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে ছিলেন মা। রাত পোহালে আবার শুরু হবে তাঁর সাংসারিক কাজ, বিদ্যালয়ে যাবে দুই মেয়ে। কিন্তু বালুবোঝাই ট্রাকের চাপায় তাঁরা তিনজনই চলে গেছেন না ফেরার দেশে।


নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার জাড়িয়া ইউনিয়নের গোজাখালিকান্দা গ্রামে গতকাল শনিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্গাপুর থেকে ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় সেটি উল্টে গিয়ে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের পার্শ্ববর্তী ঘরের ওপর পড়ে। ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বালুর নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান মা শিরিনা খাতুন (৩২), দুই মেয়ে মিতু আক্তার (১৩) ও খাদিজা আক্তার (৭)। মিতু পাশের গ্রাম বারহায় অবস্থিত এন জাড়িয়া-জানজাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে ও খাদিজা গোজাখালিকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে পড়ত। তাদের বাবা মিজানুর রহমান খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারি আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত একচালা টিনের ঘরটি রাস্তা থেকে নিচু। ভোর চারটার দিকে বালুবোঝাই ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে ঘরের ওপর পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ঘরটি পুরোপুরি ভেঙে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই ট্রাকচালক পালিয়ে যান। নিহত ব্যক্তিদের লাশ প্রতিবেশীদের উদ্যোগে উদ্ধার করা হয়।
শিরিনা খাতুনের বাবা আবুল হোসেন বলেন, মিজানুর রহমান বদলি হয়ে খাগড়াছড়ি চলে গেলেও দুই সন্তান নিয়ে এখানেই বসবাস করতেন শিরিনা। তিনি বলেন, আমরা লাশের ময়নাতদন্ত চাই না। মিজানুর আসলেই লাশ দাফন করতে চাই।
পূর্বধলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন নিহতদের আত্মীয়স্বজনেরা। মিজানুর রহমানকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি এসে মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।

No comments

Powered by Blogger.