সুরঞ্জিত দপ্তরবিহীন মন্ত্রী-তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাঁর বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে ইস্তফা দিলেও মন্ত্রিপরিষদে থেকে যাচ্ছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এপিএসের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার ঘটনায় সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে পদত্যাগের পর তাঁকে রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬-এর রুল ৩(৪)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে গতকাল মঙ্গলবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এপিএসের গাড়িতে ঘুষের টাকা পাওয়ার জের ধরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তদন্ত শেষে দোষী প্রমাণিত হলে সুরঞ্জিতের ব্যাপারে একধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলে সেই আলোকে প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
সূত্রে জানা যায়, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে নিয়ে সম্প্রতি যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সরকার তা রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিরোধী দল বিএনপি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুরঞ্জিতের পদত্যাগ দাবি করেছিল। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সুরঞ্জিত পদত্যাগ করেছেন- এমন রাজনৈতিক প্রচারণার সুযোগ সরকার বিএনপিকে দিতে রাজি নয়।
এদিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সোমবার পদত্যাগ করলেও গতকাল পর্যন্ত তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়া গতকাল কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পদত্যাগপত্র এলে সারসংক্ষেপ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।'
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করে রাখার চিন্তাভাবনা ওপর মহলে আলোচনায় ছিল। সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে বিলম্ব হওয়ায় সুরঞ্জিতের পদত্যাগপত্রও নড়াচড়া করেনি। অবশেষে তাঁকে রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়েছে।
গত ৯ এপ্রিল রাতে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিতের সাবেক এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও ছিলেন ওই গাড়িতে। তবে ঘটনার পর থেকে গাড়ির চালক আলী আজমের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় ইউসুফ ও এনামুলকে বরখাস্ত করা হয়। চাকরিচ্যুত হন ওমর ফারুক। সমালোচনার মুখে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার ঘোষণা দেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

No comments

Powered by Blogger.