নির্বাচনী প্রচারণায় ২০ বছর পর ইরাবতীতে সু চি

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচনের প্রচারণা চালাতে গতকাল মঙ্গলবার ইরাবতী প্রদেশের বদ্বীপ অঞ্চল সফর করেছেন। এ সময় সু চির সমর্থকেরা বিপুল হর্ষধ্বনি ও করতালির মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানান।


গত দুই দশকের মধ্যে ওই অঞ্চলে এটাই সু চির প্রথম সফর। প্রচুর ধান উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ ওই অঞ্চল মিয়ানমারের ‘ভাতের বাটি’ বলে পরিচিত। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের আঘাতে ওই এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
সড়ক পথে ইয়াঙ্গুন থেকে ইরাবতীর আঞ্চলিক রাজধানী পাথিনে পৌঁছান সু চি। এতে চার ঘণ্টার মতো সময় লাগে। পাথিনে রাস্তার দুই পাশে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে সু চির সমর্থকেরা তাঁকে স্বাগত জানান। নেত্রীর সমর্থনে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে স্থানীয় একটি খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন সু চি। সমাবেশে ১০ হাজারের বেশি লোক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে একটি বড় ব্যানারে সু চির প্রশংসা করে লেখা ছিল ‘মাদার ডেমোক্রেসি’। সমর্থকেরা প্রখর রোদ উপেক্ষা করে সু চির ভাষণ শোনেন। এ সময় গরমে কয়েকজন মূর্ছা যান।
হর্ষোৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে সু চি বলেন, ‘মনে পড়ে ২০ বছর আগে এখানে শেষবার এসেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘এখনো সেই একই জনসমর্থন দেখতে পাচ্ছি।’
রাজনীতিতে সু চির ফিরে আসার বিষয়টিকে নতুন বেসামরিক সরকারের সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডের আরেকটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছর বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে সামরিক জান্তার কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করে এই সরকার। এপ্রিলের উপনির্বাচনে সু চির প্রার্থিতার বিষয়টি দেশের নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার এক দিন পর সু চি এই সফরে গেলেন।
এর আগে ১৯৮৯ সালে শেষবার ইরাবতী সফর করেছিলেন সু চি। ওই সময়ও তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে যান। তখন দানুফিউ শহরে সেনা সদস্যরা অল্প সময়ের জন্য তাঁর দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করেছিল। ১৯৯০ সালে নির্বাচনকে সামনে রেখে তৎকালীন সামরিক জান্তা বেশ কয়েকবার সু চির কর্মকাণ্ডে নাটকীয়ভাবে বাধা সৃষ্টি করে। এর মধ্যে এটিও একটি ছিল।
সীমিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
মিয়ানমারের ওপর আরোপ করা বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা থেকে গত সোমবার একটি প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, সোমবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন মিয়ানমারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে একটি তুলে নেওয়ার নথিতে স্বাক্ষর করেন। ট্রাফিকিং ভিক্টিমস প্রটেকশন আইনের অধীনে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ফলে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে সীমিত আকারে সহায়তা পাবে দেশটি। এএফপি, এপি।

No comments

Powered by Blogger.