রবার্ট ব্লেক আসছেন ১৪ ফেব্রুয়ারি

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেক ১৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন। ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এ সফরের সময় দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সফরে রবার্ট ব্লেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ ব্যাপারে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এক নেতা জানিয়েছেন, ঢাকা সফরের সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন রবার্ট ব্লেক।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, এবারের সফরের সময় ব্লেকের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এডওয়ার্ড কেনেডি সেন্টারের (এডওয়ার্ড কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড আর্টস) উদ্বোধন। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এই কেন্দ্রের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র প্রথম আলোকে বলেন, এই সফরের সময়ও বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেক যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবেন। মার্কিন অগ্রাধিকারমূলক প্রসঙ্গের মধ্যে রয়েছে গণতন্ত্রের বিকাশে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, সুশাসন এবং গণমাধ্যমে ও নাগরিক সমাজের কাজের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবেশ নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবেন ব্লেক।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়টি আলোচনায় আসবে কি না, জানতে চাইলে এক কূটনীতিক গত বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত ব্লেকের ঢাকা সফরের বিষয়টি উল্লেখ করেন।
ওই সফরের সময় ব্লেক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের গতিশীলতা নিশ্চিত করতে সব পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা করি। এ জন্য সব পক্ষকে আমরা আলোচনায় বসার অনুরোধ জানাই।’ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে, তা দুই দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে বলে মন্তব্য করেছিলেন ব্লেক।
সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস জানায়, রবার্ট ব্লেক গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মসূচিও প্রত্যক্ষ করবেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সফরের দ্বিতীয় দিনে ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে যাবেন ব্লেক। বন্দরনগরে অবস্থানের সময় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন পরিদর্শন ছাড়াও ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নীতি প্রণয়নবিষয়ক পরিচালক জ্যাক সালিভান। গত ২৪ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের বিকাশে বাংলাদেশ যেটুকু পথ পাড়ি দিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তবে এ ক্ষেত্রে আরও উন্নতির সুযোগ আছে, বিশেষ করে দেশের নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের জন্য রাজনৈতিক ক্ষেত্রটা বড় করা জরুরি। আর এটি দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের টেকসই ও বৈচিত্র্য নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র।

No comments

Powered by Blogger.