তামার দরজার খোঁজে...

প্রাচীন দুর্গনগর বগুড়ার মহাস্থানগড়ের লুকানো বিস্ময় তামার দরজার খোঁজে খনন শুরু করেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। খননের শুরুতে গুপ্ত আমলের তৈরি ঠেস-দেয়াল, মৌর্য আমলের ইট, নকশা করা ইট ও শিশুদের খেলনাসামগ্রী পাওয়া গেছে।
দুর্গনগর মহাস্থানের পশ্চিম-দক্ষিণাংশের গড় এলাকায় উঁচু প্রাচীরের মাঝে ‘তাম্রদ্বার’ নামে খ্যাত স্থানটিতে এই খননকাজ চলছে। এর জন্য বরাদ্দ মিলেছে চার লাখ টাকা। গত ১৯ জানুয়ারি কাজের উদ্বোধন হয়। চলবে দেড় মাস অবধি।


প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ অব্দের কোনো একসময় (মৌর্য আমল) সুরক্ষা প্রাচীরটি নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে গুপ্ত, পাল ও সেন আমলে এটি দুর্গনগরের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহূত হয়। নগরের বাইরে যাতায়াতের জন্য প্রাচীরের মাঝ বরাবর একটি প্রবেশদ্বার ছিল বলে ধারণা করা হয়, যা তাম্রদ্বার বা তামার দরজা নামে পরিচিত। কথিত আছে, প্রবেশদ্বারটি তামার পাত দিয়ে গড়া ছিল। এ কারণে লোকমুখে ওই জায়গার নাম তাম্রদ্বার হিসেবে পরিচিতি পায়। খননে ওই দ্বারের কোনো নিদর্শন উন্মোচিত হলে আগামী বছর পুনরায় বরাদ্দসাপেক্ষে খনন করা হবে বলে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জানিয়েছে।
মহাস্থান জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ সাদেকুজ্জামান বলেন, মহাস্থানগড়ের এ অঞ্চলটি তাম্রদ্বার বলে পরিচিত। এটিকে যাতায়াতের পথ (গেটওয়ে) বলে মনে করা হয়। আসলে এটি সেই পথই কি না, তা নিশ্চিত হতে খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি উন্মোচিত হলে পর্যটকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করা যাবে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক শফিকুল আলমের নেতৃত্বে খনন দলে রয়েছেন সাবেক আঞ্চলিক পরিচালক আবদুল খালেক, বর্তমান আঞ্চলিক পরিচালক বদরুল আলম, সহকারী পরিচালক আফরোজা খান, মহাস্থান জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ সাদেকুজ্জামান ও তাজহাট জমিদারবাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মজিবুর রহমান। তাঁদের অধীনে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছেন সেখানে।

No comments

Powered by Blogger.