মোরশেদ খানের গাড়ি ভাঙচুর-চট্টগ্রামে বিএনপির নেতাদের গাড়ি বহরে হামলা

চট্টগ্রামে বিএনপির নেতাদের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। এতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বোয়ালখালীর ফুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গাড়িবহরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারও ছিলেন।


বোয়ালখালীর ঘটনা সম্পর্কে এম কে আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগের কাজ। বোয়ালখালীর পথসভা শেষ করে পটিয়ার দিকে যাওয়ার মুহূর্তে আমাদের গাড়ির বহরে আকস্মিক হামলা হয়। এতে গাড়ির কাচ ভেঙেছে।’
গতকাল এম কে আনোয়ার দলীয় নেতাদের নিয়ে বোয়ালখালীর ফুলতলায় পথসভা করেন। এ সময় মোরশেদ খান ছাড়াও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পথসভা শেষ করে তাঁরা পটিয়ার দিকে যাওয়ার মুহূর্তে গাড়িবহরে হামলা হয়।
দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বশীল এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতা এরশাদ উল্লাহর অনুসারীরা গাড়ির বহরে হামলা চালিয়েছে। এতে মোরশেদ খানের গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। ওই বহরে পাঁচটি গাড়ি ছিল। ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় গাড়িগুলো দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে।
এরশাদ উল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বোয়ালখালীর ফুলতলায় এম কে আনোয়ারকে ফুল দেওয়ার জন্য আমাদের ছেলেরা অপেক্ষা করছিল। তিনি আমাদের ছেলেদের কাছ থেকে ফুল নেওয়ার আগ মুহূর্তে মোরশেদ খান বাধা দেন। একপর্যায়ে মোরশেদ খান আমাদের ছেলেদের ওপর গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিলে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।’
উল্লেখ্য, বোয়ালখালী-চান্দগাঁও নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির দুটি পক্ষ রয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান এক পক্ষের এবং এরশাদ উল্লাহ অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে গাড়িবহরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে একটি গাড়ির কাচ ভেঙে গেছে। তবে বড় ধরনের কোনো গোলযোগ হয়নি।’
প্রস্তুতি সভা পণ্ড: এদিকে গতকাল বিকেলে নগরের উডল্যান্ড পার্কে দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা পণ্ড হয়ে যায়। সূত্র জানায়, যুবদলের কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ কারণে সভা না করে এম কে আনোয়ারসহ সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতারা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দক্ষিণ জেলা যুবদলের একটি অংশকে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এবং অপর অংশকে গাজী শাহজাহান সমর্থন দিয়ে আসছেন। এ কারণে যুবদল কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর জের ধরে উডল্যান্ড পার্কের প্রস্তুতি সভা পণ্ড হয়ে যায়।’
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দের জের ধরে উডল্যান্ড পার্কের প্রস্তুতি সভা পণ্ড হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এম কে আনোয়ার। এই প্রস্তুতি সভায় তাঁর বক্তৃতা করার কথা ছিল।
এম কে আনোয়ার বলেন, ‘উডল্যান্ড পার্কের ঘটনা তদন্ত হবে। এরপর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান বলেন, ‘উডল্যান্ড পার্কের অনুষ্ঠানস্থলে আমরা কিছু অচেনা লোক দেখেছি। ওরা হঠাৎ করে উল্টাপাল্টা স্লোগান দিচ্ছিল। আমার মনে হয়, ঢাকায় ১২ মার্চের কর্মসূচি বানচাল করতে কে বা কারা স্লোগান দিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করেছে।’

No comments

Powered by Blogger.