প্রতিক্রিয়া

মঙ্গলবার রাতে টকশোতে এই গল্প বলার পর যথারীতি যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। চায়ের কাপে ঝড় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঝড় উঠেছে ফেসবুক আর ব্লগে। তবে রাজনৈতিক মহলে ঝড় ওঠে যথারীতি ‘লেটে’। দুই দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সাংসদ গোলাম মাওলা রনীর উপস্থিতিতেই তাঁর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ সাংসদ।


ওই ঝড় সম্পর্কে গোলাম মাওলা বলেন, ‘তোফায়েল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমাদের দলের অনেকে টক শোতে যান। তাঁরা হার্ডলি দলকে সাপোর্ট করে কথা বলেন। কিন্তু আমাদের এক ছোট ভাই আছেন, তিনি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এমনভাবে কথা বলেন, তাতে মন্ত্রীরা হাস্যরসের পাত্রে পরিণত হন। এমনকি তিনি প্রধানমন্ত্রীর বাঁশির গল্পও বলেছেন”।’
গোলাম মাওলা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, কে টক শোতে বাঁশির গল্প বলেছে? তখন আমি বলি, আমি বলেছি। তখন প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, ‘তুমি এই গল্প কার কাছে শুনেছ?’ আমি বলি, অমুকের কাছে শুনেছি। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তুমি পুরোপুরি সঠিক শোনোনি। ওই দৌড় প্রতিযোগিতা লেকের পাড়ে নয়, সেটা হয়েছিল একটা স্পোর্টস স্কুলে। আর তাতে সম্ভবত সাবের প্রথম হয়েছিল, কিন্তু আমি তো সাবেরকে মন্ত্রী বানাইনি”। প্রধানমন্ত্রী হাসিমুখেই এসব কথা বলছিলেন।’
গোলাম মাওলার বিবরণ অনুযায়ী, এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রনী আমাকে নিয়েও অনেক কথা বলেন। আমি কবিতা লিখি, শেয়ারবাজার ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু রনী কে? আমি তো রনী নামে আমাদের কোনো এমপিকে চিনি না।’ এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রনী আমার পারফরমেন্স নিয়েও কথা বলেছেন।’
অবশ্য অন্য একাধিক সাংসদ বলেছেন, অর্থমন্ত্রী রনীকে ‘স্টুপিড’ বলে মন্তব্য করেছেন। সূত্রগুলো জানায়, এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রনীর শ্বশুর বিএনপি করে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি এমপি হবেন। ওর চিন্তা কী! আর রনী চলে পার্থের (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ) সাথে।’ এই কথাগুলো বলে বৈঠকে উপস্থিত শেখ হেলাল উদ্দিনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পার্থর শ্বশুর বড় নেতা। খালাও নেতা।’
গোলাম মাওলা দাবি করেন, ‘এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার যত বড় আত্মীয়ই হোক না কেন, যারা আমার পরিবারের সঙ্গে বেঈমানি করেছে, তাঁদের ক্ষমা নেই”।’
সূত্র: প্রথম আলো, ২০ অক্টোবর ২০১১

No comments

Powered by Blogger.