নানা স্টাইলের বক্তৃতা

শেষ হলো রোডমার্চ। এই রোডমার্চে বিএনপির নেতা-নেত্রীরা সেই পুরোনো স্টাইলেই বক্তৃতা দিয়ে গেছেন। একই স্টাইলের রাজনৈতিক বক্তৃতা আর কত শোনা যায়? আমাদের তো বিরক্তি বলে একটা জিনিস আছে, নাকি? তাই রাজনৈতিক বক্তৃতার নতুন কিছু স্টাইল আবিষ্কার করেছেন আলিম আল রাজি


আরজে স্টাইল হেই, ওয়েলকাম! শুরু হয়ে গেল আমাদের অনেক প্রত্যাশিত সেগমেন্ট। এই সেগমেন্টে আমি অমুক সারাক্ষণ আপনাদের সঙ্গে আছি। আমার সঙ্গে আপনারাও জয়েন করে ফেলতে পারেন। তার জন্য হাতে নিন আপনার সেলফোনটি, টাইপ করুন BNP স্পেস আপনার নাম স্পেস আপনার মেসেজ। আর পাঠিয়ে দিন ১৯৭৬ নম্বরে।
তো যা বলছিলাম, লিসেনারস! ইউ নো...বর্তমান সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ। এ জন্য আমাদের মন খারাপ। এই মন খারাপের সময়ে তাই শুরু করব একটি ঝাক্কাস আন্দোলন। আজকে হলো সেই আন্দোলনের একটি ফাটাফাটি প্রমো। প্রমোর থিম সংটি পরিবেশন করব আমি। তো, লিসেনারস, শুরু করি আমাদের প্রথম ট্র্যাক। কিপ লিসেনিং।

কবিতা স্টাইল
হাজার বছর থেকে আমি লংমার্চ করিতেছি পৃথিবীর পথে
সংসদ ভবন হতে সুধা সদনে
বিমর্ষ বদনে।
অনেক দেখেছি আমি।
আসলে চড়েছি এসি গাড়িতে, হেঁটেছে নেতা-কর্মী
আমি চোখের জলে হয়েছি সহমর্মী।

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা
ঠিক যেন বিরোধীদলীয় নেত্রী কিংবা ফারুকীর তিশা
আমাকে করেছে ব্যাকুল
নামাতে চায় দুই আবুল
সাথে নাহি কেহ, কেউ বলেনি কুইন কিংবা কিং
কেবল একবার হ্যালো বলেছিল মনমোহন সিং।

সমস্ত দিনের শেষে ধানের শীষের গন্ধের মতন
নির্বাচন আসে,
হেরে যাই ভোটে মাথায় দেই হাত
থাকে শুধু অন্ধকার আমি আর কারচুপির অজুহাত

যাত্রাপালা স্টাইল
—উপস্থিত যুবক, উপস্থিত যুবতী। সরকারি দল চায়, তারা নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখবে না।
—না না না...আমি বেঁচে থাকতে এ হতে দেব না।
—মধুবালা...কোথায়, তুমি কোথায়... দেখো মধুবালা, দেখো, আজকে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সভায় এসেছে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী...খেয়াল করো মধুবালা...ওই কোনায় থাকা যুবকের চেহারায় কী দীপ্তি!
—কে তুমি যুবক? কোন মুলুক থেকে এসেছ? কে তোমাকে সাজিয়ে দিয়েছে এই সাজে? বলো যুবক, বলো...চুপ করে থেকো না। না না না নাআআআআআআ আআআআআআআআআআ আআ!

ছড়া স্টাইল
এইবার কমু
আমি লেজে হুমু
একা কাটে নিশা
নেই বি-দিশা
সাথে আছে শুধু
লাউ আর কদু

ওহে দেশবাসী
হয়ে গেছি খাসি
একটাই কথা
আমার এই মাথা
যতনও করে
মরণের পরে
রেখে দিয়ো শুধু
এই জাদুঘরে।

দার্শনিক স্টাইল
কী হবে এই নির্বাচন দিয়ে? কী হবে চালের দাম কমিয়ে? এই মহাকালের তুলনায়, এই মহাবিশ্বের তুলনায় একটা চালের দানা আর কতটুকু বড়? আমরা কবে এসব ক্ষুদ্রতা আর তুচ্ছতাকে অতিক্রম করতে পারব? কবে? সেই সময় আসবে কখন? ভাই ও বোনেরা আমার...আত্মার কাছে প্রশ্ন করুন। ভোটটোট দিয়ে কী হবে? আত্মাই সব। একটা সূক্ষ্ম চালের দাম নিয়ে কেন মাথা ঘামাব?

No comments

Powered by Blogger.