টেন্ডারবাজি- সাড়ে চার কোটি টাকার কাজ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ সংঘর্ষ

বরিশালে এলজিইডির (স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) সাড়ে চার কোটি টাকার কাজ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ বাগিয়ে নেয়ার জন্য অপর ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে না দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে নগরীর চাদমারী এলাকায় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে। এতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তিন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয় অধীনে বরিশালে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার ৮ গ্রুপের কাজের জন্য গত ২৮শে সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। গতকাল ছিল দরপত্র জমাদানের শেষ দিন। আট গ্রুপের কাজের মধ্যে রয়েছে বরিশাল জেলার সদর উপজেলা, বাকেরগঞ্জ, গৌরনদী, আগৈলঝড়া ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় সড়ক সংস্কার, বাজার উন্নয়ন কাজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা। আট গ্রুপের কাজের জন্য মোট দরপত্র বিক্রি হয় ৯৬টি। এর মধ্যে ১৪ নম্বর গ্রুপে (সাড়ে চার কোটি টাকায় বাকেরগঞ্জের চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কার) ১৪টি দরপত্র বিক্রি হয় যা সবচেয়ে বেশি। এ গ্রুপে লায়লা বিল্ডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে দরপত্র ক্রয় করেন মহানগর ছাত্রলীগের ২ নেতা। তারা বুধবার রাতেই অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গতকাল দরপত্র জমা না দেখার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। গতকাল সকাল ১০টা থেকে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ও বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দরপত্র জমাদান শুরু হয়। সকাল থেকেই এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে মহানগর ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা অবস্থান নেয়। সাড়ে ১০টার সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দরপত্র জমা দিতে গেলে জেলা যুবলীগের সদস্য আরিফুর রহমান চুন্নুকে মহানগর ছাত্রলীগের ২ নেতার লোকজন ধাওয়া দেয়। এ সময় চুন্নুকে মারধর করে সেখান থেকে বের করে দিয়ে দরপত্র রেখে দেয়। অপরদিকে ১১টার সময় বরিশাল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দরপত্র জমা দিতে গেলে মহানগর যুবলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম টিটুকে একই ভাবে বাধা দেয়। এসময় টিটুর লোকজনের সঙ্গে অসীম দেওয়ানের সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় টিটুকে কুপিয়ে জখম করে দরপত্র ও পে-অর্ডার রেখে দেয়। পরে টিটুর লোকজন পালিয়ে যায়। ওই গণ্ডগোলের সময় মহানগর যুবলীগ সদস্য কবির হোসেন ১৪ নম্বর গ্রুপের কাজে দরপত্র জমা দিয়ে এলে তাকে বেদম প্রহার করে একপর্যায়ে কুপিয়ে জখম করে। বরিশাল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন খান বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সিসিআরআইপি প্রকল্পের ৭ থেকে ১৪ নং (মোট ৮ গ্রুপের) গ্রুপের কাজের দরপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল গতকাল। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ও বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ দরপত্র জমা নেয়া হয়েছে। যারা জমা দিতে ইচ্ছুক তারা জমা দিয়ে গেছে। জমা দেয়ার স্থানে কোন ঝামেলা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.