আকাশে আলো ফেলে তথ্য প্রদানের কৌশল উদ্ভাবন by কাজী ইনসানুল হক ও জেড এম আবুসিনা

পাতলা বাতাসে আলো ফেলে ভাসমান ছবি তৈরি করার প্রযুক্তি তুলে ধরেছে জাপানের একটি কোম্পানি। ফলে ভবিষ্যতে কোনো একদিন মেঘমুক্ত আকাশে আলো ফেলে বার্তা প্রেরণের সম্ভাবনার দ্বার প্রসারিত হয়েছে। ঠিক যেমনটা দেখা যেত ব্যাটম্যান ছবিতে। এর উদ্ভাবকরা মনে করছেন, এই পদ্ধতিকে অনাগত সুনামির মতো দুর্যোগের তথ্য প্রদানে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। এএফপি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

বার্টন ইনকরপোরেশন এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক। তারা সর্পিলাকারে আবর্তিত আলো, ওড়া প্রজাপতি ও আপেলের আকারে আলো সিস্টেমটি বহনকারী ভ্যানের কয়েক মিটার উঁচুতে অভিক্ষেপ করেন। ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে সূর্যালোকের সঙ্গে খেলার মতো ডিভাইসটি বাতাসের একটি ক্ষুদ্র অংশে তীব্র আলোকে (লেজার) কেন্দ্রীভূত করে। এর ফলে সেখানকার অণুগুলো থেকে সাদা আলো নির্গত হয়, যা দেখতে ক্ষুদ্র বিস্ফোরণের মতো এবং এলইডি বাতির মতো উজ্জ্বল।
বার্টনের গবেষক ও পরিচালক আকিরা আসানো এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো আমরা এর মাধ্যমে আলোকে কেন্দ্রীভূত করতে পারি এবং আমাদের পছন্দ অনুযায়ী আলো নির্গত করবে। প্রতি সেকেন্ডে শত শত বিস্ফোরণের আলো নির্গত হবে এবং আলোক রশ্মিগুলো নড়াচড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন একটি আকার তৈরি করবে, যা দেখে মনে হবে প্রাথমিক স্তরের একটি ত্রিমাত্রিক ছবি।’
গবেষকরা আরও বলছেন, বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে এর সম্ভাব্য চাহিদা তো আছেই, এ ছাড়াও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সতর্কতা এবং অপসারণের উপদেশ প্রেরণ করা যেতে পারে। কেননা এর জন্য দিন বা রাত্রির কোনো বিষয় নেই, প্রক্ষেপণের জন্যে কোনো স্ক্রিনেরও প্রয়োজন হয় না।
‘বিপর্যস্ত এলাকাতে আমরা এটাকে দিন–রাত ২৪ ঘণ্টাই ব্যবহার করতে পারি। তাদেরকে তথ্য এবং সতর্কতা পাঠাতে পারি।’ বার্টনের প্রধান নির্বাহী হিদেকি কিমুরা এ কথা বলে আরও জানান, অনেক সময় প্রচলিত বেতার যারা শোনেন না, তাদের জন্যে সতর্কবার্তা প্রক্ষিপ্ত করা সম্ভব।
কোম্পানিটি দক্ষিণ-পশ্চিম টোকিওর কাওয়াসাকি শহরে অবস্থিত। আগামী বছর থেকে তাঁরা ব্যবসায়ী এবং পৌরসভাগুলোতে এই প্রযুক্তি প্রদানের জন্যে আলোচনা শুরু করবেন।
কাজী ইনসানুল হক
জেড এম আবুসিনা
টোকিও, জাপান

No comments

Powered by Blogger.