স্বাস্থ্য খাতে বেসামাল দুর্নীতি

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তা সত্ত্বেও কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। অনিয়ম, দুর্নীতি ও নানা সীমাবদ্ধতা এর কারণ। একই কারণে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে মারত্মিক আর্থিক ক্ষতির শিকার হন রোগীরা, থাকেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।
সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও প্রশিক্ষণার্থী বাছাইয়ে দলীয়করণ ও অর্থ আদায় করা হয়। চিকিৎসক নিয়োগ ও পছন্দের স্থানে বদলি হতে ১০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হয়। হাসপাতালের ওষুধ, যন্ত্রপাতি, পথ্য ক্রয়ে দুর্নীতি নৈমিত্তিক ঘটনা। বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চিকিৎসকরা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষার ফির ৩০-৫০ ভাগ পর্যন্ত কমিশন নেন। একইভাবে দালালরা কমিশন পায় ১০ থেকে ৩০ ভাগ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্য খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। এ সময় স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে ১৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসলিমা আক্তার। উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপনির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক রফিক হাসান ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।
প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এ খাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে কমছে। সরকার জনপ্রতি বছরে ৩৯০ টাকা বরাদ্দ রেখেছে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে এ বরাদ্দের পরিমাণ ২ হাজার ৬৫২ টাকা হওয়া উচিত ছিল। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত জনবলের ২০ ভাগ পদ খালি। পদায়ন ও প্রশিক্ষণেও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। টিআইবির মতে, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি না থাকলে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের অর্জন আরও বেশি হতে পারতো। এসব কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরি হয় এবং বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
এ বিষয়ে যুগান্তরের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্য জানতে বৃহস্পতিবার বিকালে কয়েক দফা ফোন করা হয়। কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে চাহিদার তুলনায় শয্যার স্বল্পতা রয়েছে। যে কারণে রোগীরা অনেক ক্ষেত্রে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে শয্যা পায় না। প্রতি ১ হাজার ৬৯৯ জনের জন্য শয্যা রয়েছে একটি। ডাক্তার, নার্স এবং কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা নেই। যা আছে সেগুলোর অধিকাংশই বসবাসের উপযোগী নয়। উপজেলা পর্যায়ে এ সমস্যাটি প্রকট। উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তারদের বসার জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও (কক্ষ, চেয়ার, টেবিল, টয়লেট ইত্যাদি) নেই। জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসকদের যানবাহনের সুবিধা নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টার এবং নারী রোগীর জন্য বহির্বিভাগে পৃথক বসার ব্যবস্থা নেই।
জেলা সদর হাসপাতালে সিসিইউ, আইসিইউ, সিটি স্ক্যান যন্ত্র এবং লিফট নেই। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। উপজেলা পর্যায়ে এ সমস্যাটি আরও প্রকট। জেনারেটর থাকলেও তা চালানোর জন্য জ্বালানি তেলের বরাদ্দ পর্যাপ্ত নেই। হাসপাতালে মজুদ ওষুধের তালিকা কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেমন টানানো হয় না, তেমনি নিয়মিত তা হালনাগাদও করা হয় না।
অধিকাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে যন্ত্র সচল থাকে না। এছাড়াও আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে ফিল্ম ও ইসিজি যন্ত্রের অভাব রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে, বিশেষ করে ডিজিটাল এক্স-রে, ইকো-কার্ডিয়াক, মাইক্রোস্কোপ প্রভৃতি ধরনের যন্ত্র। হাসপাতালগুলোতে অ্যাম্বুলেন্সের অপর্যাপ্ততা রয়েছে। অনুমোদিত অ্যাম্বুলেন্সের সবগুলো সচল নয়।
অনিয়ম-দুর্নীতি : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাডহক চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগে দলীয় তদবিরের পাশাপাশি নিয়মবহির্ভূত অর্থের লেনদেন হয়। এসব নিয়োগে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অতিরিক্ত নিয়োগ প্রদানের প্রচেষ্টা করা হয় এবং নিয়োগ প্রদানের আশ্বাসে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। অ্যাডহক চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগে সুপারিশ ও অর্থ লেনদেন হয় আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ স্বাচিপ বা স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় নেতা, কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা, অফিস প্রধান সহকারী, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের একাংশের মধ্যে। অ্যাডহক চিকিৎসক নিয়োগে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে ১ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বদলি দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাক্তারদের প্রতি স্টেশনে চাকরিকাল তিন বছর এবং দুর্গম ও পার্বত্যাঞ্চলে দুই বছর থাকার নিয়মটি মানা হয় না। দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব, তদবির ও নিয়মবহির্ভূত অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বদলি করা হয়। একই অবস্থা কর্মচারীদের মধ্যে বদলির ক্ষেত্রেও। প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মচারীরা দীর্ঘদিন একই জায়গায় অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের মধ্যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। বদলিতে অর্থের লেনদেন হয় সিভিল সার্জন অফিস ও অধিদফতর পর্যায়ে।
বদলির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলায় ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা, চিকিৎসকরা উপজেলা ও জেলা সদর থেকে ঢাকায় বদলি ১ থেকে ২ লাখ টাকা, দুর্গম এলাকা থেকে সদরে, এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা এবং উপজেলা থেকে সদরে বদলিতে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা এবং সুবিধাজনক স্থানে দীর্ঘদিন অবস্থানের জন্য আড়াই লাখ বা তার বেশি টাকা ঘুষ দেন।
একই চিত্র পদোন্নতির ক্ষেত্রেও। ডিপিসি এবং এসএসবির মাধ্যমে পদোন্নতিতে দলীয় তদবির প্রাধান্য পায়। ডিপিসির মাধ্যমে পদোন্নতিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষের লেনদেন হয়। পদোন্নতিতে নিয়মবহির্ভূত অর্থের পরিমাণ নির্ভর করে পদবী, পদবীর সংখ্যা, কোন বিষয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হবেন তার ওপর। ডিপিসির মাধ্যমে পদোন্নতিতে যে ধরনের অনিয়ম করা হয় সেগুলো হচ্ছে- চাকরির অভিজ্ঞতা ও জ্যেষ্ঠতা বিবেচনা না করা, উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা না করা, প্রকাশনাকে যথার্থভাবে মূল্যায়ন না করা, সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় পাস বিবেচনা না করা, বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) সন্তোষজনক কিনা তা বিবেচনা না করা।
হাসপাতালের পথ্য, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মের তথ্য পেয়েছে টিআইবি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পথ্যের সরবরাহকারী বাছাইয়ে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। এতে আগ্রহী সব ঠিকাদারের দরপত্রে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকে না। ঠিকাদার দরপত্র কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমঝোতা আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ আদায় করে থাকে। দরপত্রে উল্লিখিত দ্রব্য সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয় না।
বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ অনুযায়ী বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রোগীর অপারেশন, চিকিৎসা ও তত্ত্বাবধানের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং প্রতি ১০ শয্যার জন্য একজন সার্বক্ষণিক নিবন্ধিত চিকিৎসক, দুজন নার্স ও একজন সুইপার থাকার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন টেকনিশিয়ান রাখা হয় না।
চিকিৎসকদের সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশনভিত্তিক চুক্তি থাকে। এ কমিশনের হার নির্ভর করে কোন ডাক্তার কতসংখ্যক রোগী পাঠায় তার ওপর। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, এ কমিশনের হার ৩০ থেকে ৫০ ভাগ পর্যন্ত হয়। একইভাবে দালালদের কমিশন ১০ থেকে ৩০ ভাগ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
অনেক ক্ষেত্রে প্যাথলজিস্ট না রেখে তাদের সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে রোগীদের রিপোর্ট প্রদান করা হয়। নিবন্ধিত কোনো মেডিকেল/ডেন্টাল চিকিৎসক বিএমডিসি কর্তৃক স্বীকৃত নয় এমন কোনো নাম, পদবী, বিবরণ ব্যবহার বা প্রকাশ করে মেডিকেল প্র্যাকটিস করতে পারবে না বলা হলেও এটি মানা হয় না।
সীমাবদ্ধতা : স্বাস্থ্যখাতে আর্থিক সীমাবদ্ধতার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ খাতে বরাদ্দের হার ক্রমান্বয়ে কমছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬ দশমিক ৫৮ ভাগ। বর্তমানে তা কমে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬০ ভাগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভালো মানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য খাতে কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির বরাদ্দ এক শতাংশ বা তারও কম। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এ হার ছিল ১ শতাংশ। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় দশমিক ৮৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে মোট বরাদ্দে উন্নয়ন ব্যয়ের হার ক্রমান্বয়ে কমছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোট বরাদ্দের ৪১ দশমিক ৪ ভাগ থেকে কমে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৩ ভাগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদর হাসপাতালের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় তা ব্যবহারের পূর্ণ ক্ষমতা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেই। হাসপাতালের চিকিৎসাসামগ্রী জরুরি প্রয়োজনে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, অবকাঠামো সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অর্থ খরচ করার ক্ষমতা সিভিল সার্জনেরও নেই।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সার্বিকভাবে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য, আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসনীয় ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে সুশাসন নিশ্চিত করে কার্যকরভাবে দুর্নীতি ও বহুমুখী অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এ খাতে অর্জন ও অগ্রগতি আরও অনেক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অর্জিত অগ্রগতির স্থায়িত্ব ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। স্বাস্থ্য খাতের মতো মৌলিক অধিকার খাতে আর্থিক বরাদ্দ বিব্রতকরভাবে নিুমানের। যার প্রভাবে স্বাস্থ্য অবকাঠামো, জনবল ও গুণগত চিকিৎসা সেবায় প্রত্যাশিত মান অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তনে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সঠিকভাবে জাতীয় প্রাধান্য নির্ধারণ অপরিহার্য।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ১৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা, বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া, জনবল নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা দূর করা, পদোন্নতিতে যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচনে যোগ্যতার বিভিন্ন সূচকে স্কোরিং ব্যবস্থা চালু করা, পেশাজীবী সংগঠনগুলোর দলীয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, স্থানীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সংসদ সদস্যদের সক্রিয় উদ্যোগে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো কার্যকর করা, চিকিৎসকের অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া, বিএমডিসির ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের ডিগ্রি ও যোগ্যতাসহ তালিকা প্রকাশ এবং নিয়মিত হালনাগাদ করা, ক্রয়, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়া চালু করা এবং বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানের মান নিয়ন্ত্রণে তদারকি কার্যক্রম ব্যবস্থা জোরদার করা।

No comments

Powered by Blogger.