পদোন্নতি ও দায়িত্ব পেলেন পাঁচবার বরখাস্ত কর্মচারী! by হামিদ উল্লাহ

দোকানের ভাড়া আদায় করে তা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১১ সালের ২০ মার্চ সাময়িক বরখাস্ত হন সিটি করপোরেশনের এস্টেট শাখার ট্রেসার মঞ্জুর মোহাম্মদ মোস্তফা মুহাদ্দেস।
বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমের বাসভবনে অবৈধ ও জোরপূর্বক প্রবেশের জন্য অভিযুক্ত হন তিনি। এর আগেও তিনি বিভিন্ন অভিযোগে চারবার সাময়িক বরখাস্ত হন। ওই কর্মচারীকেই গত শুক্রবার ছুটির দিনে পদোন্নতি দিয়ে উচ্চমান সহকারী পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন। জানা গেছে, তিনি মোস্তফা মুহাদ্দেসকে এ ধরনের কোনো দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য এর আগে মৌখিক নির্দেশ দেন। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগে সংস্থাপন শাখা থেকে দ্রুত তাঁকে উচ্চমান সহকারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভূমি বিভাগের কর্মচারীরা তাঁকে এ দায়িত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করায় শুক্রবার ছুটির দিনে এ দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করেছেন।
সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. সামসুদ্দোহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি ফাইল প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে তাতে মেয়র এখনো সই করেননি। মেয়রের সই হওয়ার পর সেটি কার্যকর হবে।’
জানা যায়, মঞ্জুর মোহাম্মদ মোস্তফা মুহাদ্দেসের মূল পদ সার্ভেয়ার সহকারী। ওই পদ থেকে পদোন্নতি পেলে তিনি সার্ভেয়ার এবং সর্বশেষ কানুনগো পদে কাজ করতে পারবেন। কিন্তু সংস্থাপন বিভাগে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কাজ করার কোনো সুযোগ তাঁর নেই। তবে গত ২৯ বছর ধরে তিনি সার্ভেয়ার সহকারী পদে কাজ না করে সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন হাটবাজার, ফেরিঘাট, খোঁয়াড়, নার্সারি, বালু উত্তোলন ও পুকুর তদারকির কাজ করেন। এ সময়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনি অন্তত চারবার সাময়িক বরখাস্ত হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বিভাগীয় মামলা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ সময় ওই দায়িত্ব পালন করে মোস্তফা মুহাদ্দেস বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হন। এরই মধ্যে তিনি নগরের মাদারবাড়ি সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ভবন থেকে ৩১ লাখ টাকায় একটি ফ্ল্যাটও কিনেছেন।
এ অবস্থায় প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা দীপক চক্রবর্তী গত ২৯ জানুয়ারি এসব দায়িত্ব পালন না করে তাঁকে মূল কাজ অর্থাৎ সার্ভেয়ার সহকারী পদে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই দায়িত্বে সরে না গিয়ে মোস্তফা মুহাদ্দেস আরেকটি আবেদন করেন। এ আবেদনে তিনি তাঁকে লিখিতভাবে এ আদেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

No comments

Powered by Blogger.