অবহেলায় পড়ে আছে নাকুগাঁও গণকবর

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পিলার থেকে কয়েক গজ দক্ষিণে ভোগাই নদীর তীর ঘেঁষা ২০ শতাংশ জায়গাজুড়ে একটি গণকবর। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা এই গণকবরটি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট আর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডালুর শূন্য রেখায় অবস্থিত।
নালিতাবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মে পাকিস্তানি হানাদারদের একটি বড় দল ভোগাই নদী পার হয়ে ভারতের ডালু বিএসএফ ক্যাম্পসহ প্রায় দুই কিলোমিটার সীমানা ঘিরে ফেলে। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া হাজারো মানুষ মেঘালয় রাজ্যের বারাঙ্গাপাড়া, ডালুবাজার, চান্দুভূঁই, মাছাংপানি, ছৈপানি, ডিমাপাড়াসহ বিভিন্ন মন্দির, রাস্তা ও গাছতলায় আশ্রয় নেয়। এসব মানুষের ওপর হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। বিএসএফের প্রতিরোধ সত্ত্বেও হানাদারদের এক ঘণ্টার তাণ্ডবে নয়জন বিএসএফ সদস্য ও শতাধিক বাংলাদেশি নিহত হন। নিহত অনেকের লাশ নদীর পানির স্রোতে ভেসে যায়। তবে তাঁদের মধ্যে যে ৫০-৬০টি মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাঁদের মধ্য থেকে বাংলাদেশি মুসলমানদের লাশ নাকুগাঁওয়ে গণকবর দেওয়া হয়। আর বিএসএফ সদস্যদের ভারতের মাটিতে সৎকার করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা কবরে এখন ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। অথচ সীমানার কাঁটা তার ঘেঁষে ভারতের নয়জন বিএসএফের সঞ্চরণে একটি সঞ্চৃতিফলক মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পাকিস্তানি হানাদাররা নাকুগাঁও-ডালুতে যে শতাধিক মানুষকে হত্যা করে তাদের লাশ শূন্য রেখার কাছে গণকবর দেওয়া হয়। শহীদদের সঞ্চরণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৯৮২ সালে সঞ্চৃতিফলক স্থাপনের জন্য একটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়। কিন্তু পরে আর কেউ এগিয়ে আসেননি। একই কথা জানান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শাহাব উদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.