রং বে র ং- দাদু ক্রিকেটার!

বয়স ৪০ ছুঁই ছুঁই মানেই যেন বুড়োদের তালিকায় নাম উঠে যাওয়া। রিকি পন্টিং চলে গেলেন, শচীন টেন্ডুলকারের বয়স নিয়ে কত কথা। আকবর সাইয়াদ হয়তো এসব দেখেশুনে হাসেন। বয়স আবার সমস্যা!
আকবরের নিজের বয়স এখন অবসর জীবন কাটানোর। নাতি-নাতনিদের রূপকথার গল্প শোনানোর, কিংবা স্ত্রীকে নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার। ৬৬ বছর পেরিয়ে আকবর কী করছেন? ক্রিকেট খেলছেন। বাড়ির আঙিনায় শখের খেলা নয়, রীতিমতো নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিজ দেশকে!
একটা জায়গায় আবার তিনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সমান্তরালে। রোনালদো পর্তুগাল জাতীয় দলের ফুটবল অধিনায়ক, আর আকবর ক্রিকেট অধিনায়ক। ক্রিকেটের কুলীন জগতের অনেকেই হয়তো জানেন না, ইউরোপে ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ ডিভিশন ওয়ান, টু টুর্নামেন্ট হয় নিয়মিতই। ডিভিশন টুতে পর্তুগাল খেলে স্পেন, বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, লুক্সেমবার্গ, ক্রোয়েশিয়া ও গ্রিসের মতো দেশের সঙ্গে। আকবরকে বলতে গেলে পর্তুগাল ক্রিকেটের জনকই বলা যায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দেশের আজীবন অধিনায়ক তিনি! সেই ১৯৯৩ সাল থেকে টানা নেতৃত্ব দিচ্ছেন পর্তুগালকে। অথচ পর্তুগাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের জন্মই ১৯৯৪ সালে। আইসিসির সদস্যপদ পায় আরও দুই বছর পর।
আকবরের জন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার বছর খানেক পর। জন্মস্থান পর্তুগাল, তবে জন্মসূত্রেই তিনি পর্তুগিজ। সে সময় মোজাম্বিক ছিল পর্তুগালের উপনিবেশ। ‘যৌবনে’ দলের ওপেনার কাম উইকেটকিপার ছিলেন আকবর। এখনো উইকেটকিপার, তবে বয়স ব্যাটিং অর্ডারে একটু নিচে নামিয়েছে তাঁকে।
আকবরের চেয়েও বড় বিস্ময় সম্ভবত রাজা মহারাজা সিং। একমাত্র প্রথম শ্রেণীর ম্যাচটি খেলেছিলেন ৭২ বছর বয়সে! ১৯৫০ সালে কমনওয়েলথ একাদশের বিপক্ষে বোম্বে গভর্নর একাদশকে নেতৃত্বের সম্মান দেওয়া হয়েছিল পাঞ্জাবের কাপুরথলা রাজপরিবারের সন্তান। সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা ও অভিষেক—দুটো রেকর্ডই চিরকালের জন্য তাঁর! এক বিখ্যাত নামও আছে ক্রিকেটার দাদুদের তালিকায়। ভারতের সি কে নাইডু শেষ প্রথম শ্রেণীর ম্যাচটি খেলেছেন মৃত্যুর তিন বছর আগে, ৬৯ বছর বয়সে!
 আরিফুল ইসলাম

No comments

Powered by Blogger.