পাঠকের প্রশ্ন- আইনি পরামর্শ

যেকোনো আইনি সমস্যা ও প্রশ্ন থাকলে লিখুন। বিজ্ঞ আইনজীবীরা পরামর্শ দেবেন। ঠিকানা: আইন অধিকার, প্রথম আলো, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ain@prothom-alo.info

স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে চাইলে কী করণীয়?
আমি তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস পর থেকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ও আমার পরিবারের সঙ্গে কলহ শুরু হয়, যা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। শুধু পরিবার ও সমাজের কথা বিবেচনা করে আমি এত দিন চুপ ছিলাম। আমার স্ত্রীর জন্য আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এমনকি আমার পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছেদ হওয়ার পথে। আমি আমার স্ত্রীকে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য ব্যক্তিগত প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু সে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে, যা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
এ অবস্থায় আমার পরিবার ও নিজেকে বাঁচানোর জন্য কী করতে পারি। আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে আপনার সাহায্য কামনা করছি।
গৌতম মিত্র

পরামর্শ: কোন পরিপ্রেক্ষিতে আপনার কাছ থেকে এত টাকা দাবি করছেন আপনার স্ত্রী, সেটি স্পষ্ট নয়। এটি যদি যৌতুকের পর্যায়ে হয়, তা হলে যৌতুক নিরোধ আইনে আপনার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিকার চাইতে পারেন। আপনার নাম দেখে মনে হচ্ছে আপনি হিন্দু সম্প্রদায়ের। এ ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো সম্ভব নয়। তবে আপনি পৃথক থাকতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর আইনিভাবে প্রাপ্য ভরণ-পোষণ দিয়ে যেতে হবে।

বাবার তৃতীয় স্ত্রী কি সম্পত্তি পাবে?
প্রশ্ন: ১৯৭৮ সালে আমার বাবা প্রথম বিবাহ করেন। আমার প্রথম মা অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় ১৯৮৬ সালে সবার অনুমতিক্রমে বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করেন। প্রথম মায়ের সন্তান হচ্ছে তিন ভাইবোন এবং দ্বিতীয় আমার মায়ের সন্তান হচ্ছে পাঁচ ভাইবোন। সবার বড় বোনের বয়স ৩২ বছর এবং সবচেয়ে ছোট বোনের বয়স ১৪ বছর। আমরা সবাই একসঙ্গে থাকি।
তারপর আনুমানিক ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সালে পরিবারের এবং সমাজের অজান্তে আমার বাবা তৃতীয় বিবাহ করেন। এমনকি দুটি পাঁচ ও সাত বছরের ছেলেও আছে। সন্তান হওয়ার পর আমরা শুনতে পারলাম যে আমাদের বাবা বিবাহ করেছেন। এ অবস্থায় গত ১৬ এপ্রিল আমার বাবা মারা যান। বাবা বেঁচে থাকতে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
এখন তৃতীয় স্ত্রী অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় কী?
মো. সুমন মিয়া, কুমিল্লা।

পরামর্শ: আপনার বাবার সত্যিই যদি তৃতীয় স্ত্রী থাকে এবং তার প্রমাণপত্র থাকে, তাহলে তাঁরও স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার রয়েছে। এবং তাঁর ছেলেদেরও অধিকার রয়েছে। ইসলামী ফরায়েজ আইন অনুযায়ী তারাও আপনার বাবার সম্পত্তির ভাগ পাবে। তবে এ জন্য হুমকি-ধমকি দিলে, তা অপরাধ। এ জন্য আপনারা ফৌজদারি আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। আপাতত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করে রাখতে পারেন।
—পরামর্শ দিয়েছেন
রফিকুর রহমান পাটওয়ারী
সাবেক জেলা ও দায়রা জজ

No comments

Powered by Blogger.