এএফপির বিশ্লেষণ- তালাবানি চলে গেলে ইরাকে সংকট বাড়বে?

ইরাকে উদারপন্থী সুন্নি সম্প্রদায়-সমর্থিত ইরাকিয়া ব্লক ও শিয়া সম্প্রদায়-সমর্থিত প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিরোধের জের ধরে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারী যোগ্য নেতার অভাব দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জালাল তালাবানি অসুস্থ অবস্থায় এখন জার্মানিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের ধারণা, ৭৯ বছর বয়সী কুর্দি প্রেসিডেন্ট তালাবানির অসুস্থতা ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে। তিনি যদি পদত্যাগ করেন বা মারা যান, তাহলে তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচনের প্রক্রিয়াও বিলম্বিত হতে পারে।
ইরাকে গত বছর রাজনৈতিক সংকট তীব্র হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট তালাবানি দেশটির বিরোধপূর্ণ বিভিন্ন দলের রাজনীতিক, সুন্নি ও শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়, আরব ও কুর্দি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে গত সোমবার হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বৃহস্পতিবার জার্মানিতে স্থানান্তর করা হয়।
বিশ্লেষক জন ড্রেক বলেন, কাগজে-কলমে তালাবানির ক্ষমতা সীমিত হলেও, তিনি দেশের সংকটময় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি খুঁজে বের করা কঠিন হবে।
ইরাকি অর্থমন্ত্রী রাফা আল-এসাওবির ১০ জননিরাপত্তারক্ষীকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি গত শুক্রবার এ কথা জানান। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করার জন্য তালাবানির মতো দক্ষ ব্যক্তির অভাব হবে।
ইরাকিয়া ব্লকের সুন্নি সদস্য এসাওবি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, মিলিশিয়া বাহিনী অবৈধভাবে তাঁর দপ্তর ও বাসায় অভিযান চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মালিকি রাষ্ট্রনেতাসুলভ আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে।
এদিকে এসাওবির নিরাপত্তারক্ষীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে রাজনৈতিক বিরোধের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি করে মালিকি বলেন, এতে করে দেশকে জাতিগত সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ‘পেশাদার আচরণ করেননি’।
মালিকিকে অপসারণে পার্লামেন্টে বিরোধীদের প্রয়োজনীয় আসন নেই। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের উদ্যোগ আবার নেওয়া হবে বলে এসাওবি গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক আল-হাশেমির নিরাপত্তারক্ষীদেরও এক বছর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইরাকিয়া ব্লকের সদস্য সুন্নি সম্প্রদায়ের নেতা হাশেমি পরে তুরস্কে আশ্রয় নেন। একাধিক মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.