বাংলাদেশ কার্টুন ফেস্ট ২০১২ by সৈয়দ খালেদ সাইফুল্লাহ

কার্টুন প্রদর্শনী চলছে রাজধানীর দৃক গ্যালারির দোতলা আর তিনতলায়। কিন্তু তিনতলায় ঢুকেই একটা ধাক্কা খেতে হলো! প্রদর্শনীর জন্য দেয়ালে ঝোলানো রয়েছে সারি সারি কার্টুন, তা দেখার জন্য দর্শকও আছেন সারি সারি; ভালো কথা। কিন্তু হলের মাঝখানে এত মানুষের জটলা কেন? উঁকিঝুঁকি মেরে বোঝা গেল সেখানে চলছে লাইভ ক্যারিকেচার সেশন! দেশের তরুণ কার্টুনিস্টরা সমানে এঁকে চলেছেন প্রদর্শনীতে আসা দর্শকদের মজার মজার সব ক্যারিকেচার। আর দর্শকেরাই বা এই মজা নেবেন না কেন? তাই কার্টুন দেখার এক ফাঁকে অনেকেই ধরনা দিচ্ছেন প্রিয় কার্টুনিস্টদের কাছে, যদি নিজের বা খুব প্রিয় কোনো মানুষের জন্য একটা ক্যারিকেচার করিয়ে নেওয়া যায়!
গত ১৫ নভেম্বর থেকে ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ কার্টুন ফেস্ট ২০১২’। ফেস্টিভ্যালই বটে, কারণ এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের পেশাদার ও অপেশাদার কার্টুনিস্ট ও অ্যানিমেটরদের মোট ১৪০টি কার্টুন ও ইলাস্ট্রেশন। তিনটি ভাগে বিভক্ত এই প্রদর্শনীর এক ভাগে দেখানো হচ্ছে অ্যানিমেটরদের ক্যারেক্টার ডিজাইন ও কনসেপ্ট আর্ট এবং তাদের অ্যানিমেশন ভিডিও ক্লিপ।
এক ভাগে রয়েছে দেশের প্রখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে ক্যারিকেচার বা ব্যঙ্গ মুখাবয়ব। আর বাকি এক ভাগে প্রদর্শনের জন্য রয়েছে কার্টুন।
উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রথিতযশা কার্টুনিস্ট নজরুল ইসলামের হাতে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন যৌথভাবে এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বি বি সাহা রায় এবং বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে আহসান হাবীব, শিশির ভট্টাচার্য্য ও শাহরিয়ার খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এই তিন কার্টুনিস্ট। সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হক। আয়োজনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘শোরগোল’।
অ্যানিমেশন বিভাগে চলছে আমাদের দেশীয় অ্যানিমেটরদের মনোমুগ্ধকর সব অ্যানিমেশন ভিডিও ক্লিপ, ক্যারিকেচার বিভাগে দর্শকদের ফিসফিসানি শোনা যাচ্ছে—কোনটা কার ক্যারিকেচার—এই আলোচনায়। কার্টুন বিভাগে কোনো কার্টুন দেখে দর্শকের ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি, কোনোটায় সমাজের অসংগতির দিকে তির্যক বিদ্রূপে দর্শকের কপালে চিন্তার কুঞ্চন।
পাঠক, আরেকজনের মুখে ঝাল খেয়ে লাভ কী? নিজেই বরং ঘুরে আসুন। ফেস্টিভ্যালের শেষ দিন কিন্তু আজই! আপনার জন্য দরজা খোলা থাকবে দুপুর তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত। এখনই বরং রওনা হয়ে পড়ুন ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে, উপভোগ করে আসুন এই সময়ের বাংলাদেশের কার্টুন, ক্যারিকেচার আর অ্যানিমেশন।

No comments

Powered by Blogger.