অস্ত্রবাহী ড্রোন বানাতে মরিয়া পাকিস্তান-* আস্থার ঘাটতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য মিলছে না * এগিয়ে এসেছে চীন

অস্ত্রবাহী চালকহীন বিমান বা ড্রোন বানাতে চায় পাকিস্তান। তবে উন্নত প্রযুক্তি ও যথাযথ উপকরণের অভাবে তারা খুব একটা এগোতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও অস্ত্রবাহী ড্রোনের আবদার করেছিল দেশটি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন না করে দিয়েছে। তবে হাল ছাড়েনি পাকিস্তান। ইসলামাবাদ আশা করছে, 'বন্ধু' বেইজিংয়ের সহযোগিতায় সফল হবে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী চীন অবশ্য ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ড্রোন পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করতে চায়। যদিও চীনা ড্রোনের সক্ষমতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দিহান।
ড্রোন তৈরির বিষয়টি পাকিস্তানের জন্য বেশ স্পর্শকাতর। তালেবান ও আল কায়েদা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে চালানো অভিযানগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র এই বিমান এত বেশি ব্যবহার করেছে যে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে। পাকিস্তান সরকার প্রায়ই অভিযোগ করে_সিআইএর ড্রোন দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে। যদিও অতীতে সামরিক-বেসামরিক নেতারা সিআইএর অভিযানকে সমর্থন দিয়েছে।
জঙ্গিদের ওপর সরাসরি নিজেরা হামলা চালানোর জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্রবাহী ড্রোন চায় পাকিস্তান। তবে স্পর্শকাতর প্রযুক্তি ও আস্থার ঘাটতির কারণেই যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের দাবি নাকচ করে দেয়। অস্ত্রবাহী ড্রোনের পরিবর্তে তারা পাকিস্তানকে নজরদারির ড্রোন দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ গত সপ্তাহে করাচিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামবিষয়ক একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে ড্রোন বিষয়ে বেইজিংয়ের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার আভাস দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা জানান, নিজস্ব প্রযুক্তিতে ড্রোন তৈরিতে কাজ করছে পাকিস্তান। নজরদারির ড্রোনগুলোকেই অস্ত্র বহনে সক্ষম করে তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত সাত-আট মাস ধরে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নও চলছে। এসব ড্রোনের নাম দেওয়া হয়েছে শাহপুর। তবে প্রযুক্তিগত কারণে মার খেয়ে যাচ্ছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্রিডেটর ও রিপার ড্রোনগুলো লেজার নির্দেশিত। নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে এগুলোর জুড়ি নেই। পাকিস্তানের বানানো ড্রোন ৫০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক বহন করতে পারে। মার্কিন ড্রোনের বহন ক্ষমতা এর চার গুণ। পাকিস্তানের শাহপুর ড্রোন উড়তে পারে আড়াই শ কিলোমিটার। সেখানে প্রিডেটর এর পাঁচ গুণ পথ পাড়ি দিতে সক্ষম।
তবে এতটা পিছিয়ে নেই চীনা ড্রোনগুলো। চীন পাকিস্তানের কাছে যে ড্রোন বেচতে চাইছে তা মার্কিন ড্রোনগুলোর সক্ষমতার প্রায় কাছাকাছি বলে দাবি করেছে তারা। তবে এর পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। পাকিস্তান এখনো চীনের কাছ থেকে ড্রোন কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি। পাকিস্তানের সামরিক ড্রোন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, শিগগির এ ধরনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে সরকার। সূত্র : এপি।

No comments

Powered by Blogger.