ঢাকা সিটি করপোরেশন- বিদ্যমান সীমানা অনুযায়ী নির্বাচন চায় সরকার by রোজিনা ইসলাম

বিদ্যমান সীমানা বহাল রেখেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) নির্বাচন করতে চায় সরকার। এ জন্য নির্বাচনসংক্রান্ত রিট নিষ্পত্তির আবেদন জানিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আদালতে জবাব পাঠানো হয়েছে। জবাবে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে এর অনুলিপি হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে।
১৫ নভেম্বর এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩৬ জন কাউন্সিলর ও নারীদের জন্য ১২টি সংরক্ষিত আসন এবং দক্ষিণে ৫৬ জন কাউন্সিলর ও নারীদের জন্য ১৯টি সংরক্ষিত আসন ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারি সূত্র বলছে, আদালতে পাঠানো জবাবে বলা হয়েছে, অধিক নাগরিকসেবা দেওয়ার জন্যই ডিসিসি বিভক্ত করে উত্তর ও দক্ষিণ করা হয়েছে। এই বিভাজনের মাধ্যমে শুধু ওয়ার্ড ভাগ করা হয়েছে। কোনো ওয়ার্ডের সীমানা পরিবর্তন করা হয়নি। এ কারণে সীমানা পরিবর্তনের কোনো প্রশ্ন আসে না।
জবাবে আরও বলা হয়, দুই সিটি করপোরেশন গঠনের পর ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর ওয়ার্ডের সংখ্যা ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর পরও নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে ১৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ মনে করে, ডিসিসি নির্বাচন যেকোনো সময় করা সম্ভব। এই বিবেচনায় রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে অথবা রুল খারিজ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ মনে করে, নতুন করে সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে অনেক ধরনের মামলা-মোকদ্দমা হবে। আর এ কারণে দ্রুত নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে স্থানীয় সরকারসচিবের বৈঠকের পর ডিসিসি নির্বাচনের ব্যাপারে আইনি জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে সচিব আবু আলম মো. শহিদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টকে অনুরোধ জানিয়েছি, সীমানা যেমন আছে তেমন রেখে মামলাটি নিষ্পত্তি করার জন্য। পরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বিষয়টির সমাধান করবেন।’
সচিব আরও বলেন, ‘সীমানা নির্ধারণ করা খুব দুরূহ কাজ। প্রত্যেকে যে যেই ওয়ার্ডে থাকে, সেই ওয়ার্ডেই থাকতে চায়। তাই সীমানা নির্ধারণ করতে গিয়ে যদি ওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হয়, তবে অনেক মামলা-মোকদ্দমা হবে। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে।’
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করে সংসদে বিল পাস হয়। নতুন আইনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ৫৬ এবং উত্তরকে ৩৬টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। আইন অনুযায়ী নির্বাচনের আগে ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে সীমানাবিন্যাসের পর প্রস্তাবিত ওয়ার্ডের তালিকা প্রকাশ করে এ-সংক্রান্ত আপত্তি ও পরামর্শ দাখিলের আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। এরপর দাবি ও আপত্তির নিষ্পত্তি করে ওয়ার্ডের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সব শেষে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ওয়ার্ডের সীমানাবিন্যাস করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.