পাঠকের মন্তব্য: অনলাইন থেকে- বলুন, কথা দিয়ে কথা রাখবেন

অনলাইনে প্রথম আলো (pৎothom-alo.com) পড়া হয় ১৯০টি দেশ থেকে। পড়ার পাশাপাশি পাঠকেরা প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত দেন। তাঁদের এ মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।
১২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ তিন বছরে
সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। প্রথম আলোয় এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর মহিউদ্দীন মাসউদ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন: দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শুধু দুদকের মামলায় সামগ্রিক দুর্নীতির তেমন কোনো উন্নতির আশা করা যায় না। চিহ্নিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কারাগারে ঢোকাতে হবে। ভিওআইপি উন্মুক্ত করা ছাড়া এ ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প নেই।
জাহাঙ্গীর হোসেন: সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত, বাহ! কেমন সরকার আমরা পেলাম? যাক, আবারও ভোট দিয়ে চুরি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করার সুযোগ করে দেব আমরা, কোনো চিন্তা নেই।
মাজহার: কাতারে আমরা যাঁরা থাকি, মোবাইল বা ল্যান্ড ফোনের মাধ্যমে ফোন করলে প্রতি মিনিটে খরচ হয় বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ থেকে ১১ টাকা। অথচ ভিওআইপির মাধ্যমে দেশে ফোন করলে লাগে আড়াই থেকে তিন টাকা। তাই আমরা সবাই চেষ্টা করি ভিওআইপির মাধ্যমে ফোন করতে। শুধু তা-ই নয়, এই ভিওআইপির মাধ্যমে ভারতে ফোন করলে খরচ হয় প্রতি মিনিটে এক টাকা। অধিকাংশ ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান দেশে কিছু লাগে না। বাংলাদেশে ভিওআইপির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন বলে মনে করি।

সুভাষ দত্ত আর নেই
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সুভাষ দত্তের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত প্রথম আলোর পাঠকেরা। পাঠক আবদুল্লাহ আল-মামুন লিখেছেন: বলতে গেলে সুভাষ দত্ত ছিলেন চলচ্চিত্রের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও আমাদের অহংকার। আমরা একজন গুণী মানুষকে হারালাম। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
তাপু: ডুমুরের ফুল ছবিটা সেই ছোটকালে দেখে অনেক কেঁদেছিলাম। আর আবির্ভাব যখন টিভিতে দেখি, তখনো কাহিনি বোঝার বয়স হয়নি আমার। তবে তার গান এখনো ভোলার নয়। ভালো চলচ্চিত্রনির্মাতার পাশাপাশি সুভাষ দত্ত একজন অনেক ভালো মানুষও বটে। বিধাতা তাঁকে নিশ্চয় স্বর্গগামী করবেন।
মোল্লা বাবুল: বাংলা সিনেমার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র নিভে গেল। জীবনমুখী ও সৃজনশীল চলচ্চিত্র নির্মাণে সুভাষ দত্ত বাংলাদেশে একজন পথিকৃৎ ছিলেন। চলচ্চিত্রশিল্পে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে তিনি বর্তমান যুগের চলচ্চিত্রকারদের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবেন। সৃষ্টির পথে যেন পূর্ণতার শেষ নেই। অসংখ্য সৃষ্টির পরও তাই রয়ে যায় অতৃপ্তি। আর সেই অতৃপ্তি নিয়েই জীবনকে বিদায় জানালেন বাংলা চলচ্চিত্রের পুরোধা নির্মাতা সুভাষ দত্ত।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক
টাঙ্গাইলে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই ডাক দিয়েছেন ড. কামাল, বি. চৌধুরী, আ স ম রব ও কাদের সিদ্দিকী। এ সম্পর্কে আকাশ আহমেদ লিখেছেন: যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করুন। দুর্নীতি নির্মূলের অঙ্গীকার করুন। বলুন যে, আপনারা প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করবেন। কোনো ধর্মভিত্তিক দলকে প্রশ্রয় দেবেন না। বিএনপি বা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কস্মিনকালেও জোট বাঁধবেন না এবং রাজনীতিতে কখনোই ধর্মের কার্ড ব্যবহার করবেন না। আর বলুন, কথা দিয়ে কথা রাখবেন। তাহলেই আপনাদের কথা ভাবব। নইলে না।
এম এ কিউ মজুমদার: ১৬ কোটি মানুষের এই ছোট্ট বাংলাদেশ, যেখানে অনেক লোক খোলা আকাশের নিচে বসবাস করে, সেখানে কেউ সেনানিবাসের বাড়ি, কেউ গণভবন, কেউ গুলশানের বাড়ি—এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদ সারা জীবন ভোগ করার সুবিধা নিতে চেয়েছেন, তাঁরাই আমাদের দেশের কর্ণধার ও জনগণের সেবক। জনগণের ওপর প্রতিবছর নতুন করের বোঝা চাপিয়ে, সেই করের টাকা জনগণের জন্য খরচ না করে, আমাদের দেশের কর্ণধাররা অনেক সঙ্গী-সাথি নিয়ে ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করেন, বিলাসবহুল হোটেলে থাকেন এবং বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা নেন। সরকারি চাকরি করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেলেও তাঁদের গাড়ি-বাড়ি-ব্যাংক ব্যালান্স সবই থাকে। হায় রে! দুখিনী বাংলা মা আমার; দুঃখ আমার একটাই, তোমার আপন কেউ নেই।

পুলিশ কেন মার খাচ্ছে?
সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। কেন তাঁরা মার খাচ্ছেন—এই প্রতিবেদনে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন কামরুল হাসান। এ প্রসঙ্গে জাকির লিখেছেন: পুলিশ কেন মার খাচ্ছে, এ কথা না বলে বলা উচিত, পুলিশকে কেন মার খাওয়ানো হচ্ছে। বড় ধরনের রাজনৈতিক প্যাঁচ না থাকলে এ ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা নয়।
জয়নুল আবেদীন খান: আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সদস্য হিসেবে নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেলে যা হয়, তা-ই হচ্ছে। পুলিশের বেশির ভাগ কর্মকর্তা দলীয় পক্ষ অবলম্বন করায় বর্তমানে এ রকম হচ্ছে।
সেলিম সারোয়ার: পুলিশ কেন মার খাচ্ছে? লাখ টাকার প্রশ্ন। বাংলাদেশের পুলিশ জনগণের সেবক নয়, তারা নিজ পোশাকের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে প্রতারণা করছে। একসময় দেখতাম, একটা নিরীহ মানুষকে দুর্বৃত্তরা পেটাচ্ছে অথবা এক দল আরেক দলকে পেটাচ্ছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। এখন সেই পাপ তাদের গ্রাস করছে। এখন পুলিশকে পেটাচ্ছে অথচ তাদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসছে না, এমনকি পাশের পুলিশ সদস্যও না। এটাই তো হওয়ার কথা, তাই না?

তাহেরপুত্রের পেছনে রাষ্ট্র, সন্তানহারার ভরসা আল্লাহ
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগের নেতা তাহেরের ছেলে এইচ এম বিপ্লব এখন প্রায় মামলামুক্ত। তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা আগেই মাফ হয়েছে। এখন অন্যান্য চলমান মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ১৪ নভেম্বরের প্রতিবেদনে রোজিনা ইসলাম সেই কাহিনি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। এ সম্পর্কে শামীম আহসান লিখেছেন: আইনের শাসন চাই। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে এসব চলতেই থাকবে। এ দেশে সাধারণ মানুষের জন্য এক আইন আর রাষ্ট্রযন্ত্রে যখন যাঁরা অধিষ্ঠিত থাকেন, তাঁদের জন্য আরেক আইন। আমি এটা বুঝতে পারছি না, তাহেরপুত্র বিপ্লব আওয়ামী লীগের কী এমন যে তাঁকে রক্ষা করা না গেলে জাতীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। সে যদি নির্দোষ হয়, তবে আইনগতভাবে নির্দোষ প্রমাণিত হতে ক্ষতি কী?
বিপ্লব রায়: তাহেরপুত্র নিশ্চয়ই সাধনাবলে অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়েছেন। নয়তো এ সরকার তাঁর জন্য যা করল, তাতে সরকারকেই পুরস্কার দেওয়া উচিত।
শাহিন: লক্ষ্মীপুরের তাহেরপুত্র এইচ এম বিপ্লবকে বাঁচাতে রাষ্ট্রযন্ত্র এককাট্টা। বড় আচানক দেশে আমাদের বাস। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে বিপ্লব জেল খাটলে রাষ্ট্রের জন্য তা বড়ই কলঙ্কের বিষয়!
মো. আবদুল্লাহ হেল ফরিদ: ন্যায়বিচার এখন হয়ে গেছে ‘নাই-বিচার!’ শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করে বলবেন দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আর বাকি খুনিদের সাতখুন মাফ—এটাকে তো আইনের শাসন বলে না।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন pৎothom-alo.com)

No comments

Powered by Blogger.