অদ্ভুত সেই উটটা যাচ্ছেই না ॥ উত্তমের মা মাসি রিমান্ডে- ০ আইজির কক্সবাজার সফরকালে এহেন পুলিশী কর্মকাণ্ডে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া -০ স্থানীয় প্রশাসনে জামায়াত-শিবিরের ভূত! -০ মাধু ও আদি বড়ুয়ার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে নির্মূল কমিটি by মোয়াজ্জেমুল হক ও এইচএম এরশাদ

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে বিহার মন্দির ও বৌদ্ধ পল্লীতে সাম্প্রদায়িক নির্লজ্জ যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে যখন সরকারের শীর্ষ মহল বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম ক্ষুব্ধ তখন ‘অভিযুক্ত’ পলাতক উত্তম বড়ুয়ার বৃদ্ধা মা এবং মাসিকে গ্রেফতার ও রিমান্ডের ঘটনায় স্থানীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।


বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে আবারও সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ। বিশেষ করে পুলিশের আইজি কক্সবাজারে থাকা অবস্থায় উত্তম বড়ুয়াকে খুঁজে বের করতে ব্যর্থ পুলিশ তার মা মাসিকে হয়রানির মাধ্যমে কেন নির্যাতন শুরু করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
উল্লেখ্য, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খোন্দকার গত সোমবার তিন দিনের সফরে কক্সবাজার এসেছেন এবং অবস্থান করে সহিংসতার ঘটনার পূর্ব এবং পরবর্তী পুলিশী কার্যক্রম দেখভাল করছেন। আজ বুধবার তাঁর কক্সবাজার ত্যাগের কথা রয়েছে। এ অবস্থায় উত্তম বড়ুয়ার জন্য তার মা মাসি হেনস্থা হবেন তা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। প্রসঙ্গত, রামুতে সহিংস ঘটনার পরদিন থানায় একটি মামলা হয়। সাবেক ওসি নজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন। উপজেলা সদরের হাইটুপি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুকে পবিত্র কোরান অবমাননাকর ছবি ট্যাগ করার ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত পরিবেশের দিকে যাচ্ছিল, তখন রামু পুলিশ উত্তম বড়ুয়াকে না পেয়ে তার মা মাধু বড়ুয়া (৪১) ও মাসি আদি বড়ুয়াকে (২৬) থানায় নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, রামুর ঐ মামলায় শুধু পলাতক উত্তম বড়ুয়াকে একমাত্র আসামি দেখানো হয়ছে। কিন্তু ১ অক্টোবর প্রত্যাহারকৃত ওসি নজিবুল এ মামলায় তার মা মাধু বড়ুয়া ও মাসি আদি বড়ুয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত গ্রেফতারকৃতদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। গত সোমবার দুই বোনকে আদালতে পুনরায় হাজির করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের চার দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানালে আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আজ বুধবার তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কাল বৃহস্পতিবার তাদের পুনরায় আদালতে সোপর্দ করার কথা রয়েছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, উত্তমের মাসি আদি বড়ুয়া ঘটনার পূর্বে মহেশখালী থেকে বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। তাঁর রয়েছে দুগ্ধপোষ্য এক শিশুসন্তান। তার নাম আনিসা বড়ুয়া সীমা। বয়স মাত্র ১৪ মাস। মায়ের বুকের দুধ খেতে না পেয়ে শিশুটি সারাক্ষণই কান্নাকাটি করছে। পুলিশী হেফাজতে এবং আদালত প্রাঙ্গণে আদি বড়ুয়ার স্বামীকে দেখা গেছে শিশুটিকে নিয়ে ঘুরতে। যখনই সুযোগ হয়েছে তখনই মায়ের দুগ্ধ পান করিয়েছেন। ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা বসু দত্ত চাকমা গত সোমবার শিশু সীমাকে মায়ের কাছে দেয়ার আবেদন জানান আদালতে। রামু আদালতের বিচারক তাওহিদুল হক শিশুটিকে তার মায়ের সঙ্গে রাখার আদেশ দিলে শিশুটি ফিরে যায় মায়ের কোলে। অবুঝ এ শিশুটির ঠিকানা এখন জেলখানা। উল্লেখ্য, উত্তমের মা ও মাসিকে যখন তাদের হাইটুপি গ্রামের বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করছিল তখন আদি বড়ুয়ার শিশু কন্যা সীমা ঘুমিয়েছিল। মা আদি বড়ুয়াকে পুলিশ যখন নিয়ে যাচ্ছিল পরিবারের সদস্যরা তখন শিশুটিকে সঙ্গে নেয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু প্রত্যাহারকৃত পাষাণ ঐ ওসি নজির দুগ্ধপোষ্য শিশুকে মায়ের সঙ্গে নিতে দেয়নি। তখন থেকেই বাবার কাছে সীমার দিন কেটেছে রাতদিন কান্নাকাটির মধ্য দিয়ে। বঞ্চিত হয় মায়ের দুগ্ধপান থেকে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তীব্র নিন্দা ॥ রামুর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার একটি মামলায় উত্তম বড়ুয়ার মা মাধু বড়ুয়া ও মাসি আদি বড়ুয়ার গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। মঙ্গলবার সংগঠন সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর জামায়াত-বিএনপি সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলায় দেশের সকল বিবেকবান নাগরিক ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত। নিরীহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর এ ধরনের নজিরবিহীন হামলার কারণ হিসেবে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতকারীরা বলেছে, উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুকে কোরান অবমাননাকর ছবি পাওয়া গেছে। বর্মায় বৌদ্ধরা মসজিদে আগুন দিয়েছে। কিন্তু দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকসমূহের রিপোর্ট এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এ দুটো ঘটনাই সম্পূর্ণ বানোয়াট। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ম্লান করার জন্য জামায়াত ও বিএনপির স্থানীয় নেতারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এ বর্বরোচিত হামলা সংঘটিত করেছে। এ কাজে তারা আওয়ামী লীগের কিছু স্থানীয় নেতাকেও ব্যবহার করেছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুকে জালিয়াতির মাধ্যমে কারা কিভাবে কোরান অবমাননাকর ছবি যুক্ত করেছে তা ইতোমধ্যেই বেরিয়ে এসেছে। অথচ স্থানীয় পুলিশ সাম্প্রদায়িক দুষ্কৃতকারীদের তুষ্ট করার জন্য উত্তম বড়ুয়ার মা ও মাসিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে। উত্তম বড়ুয়ার মাসির একটি শিশুসন্তানও রয়েছে, যাকে দেখার এখন কেউ নেই। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ভুক্তভোগী উত্তম বড়ুয়ার পরিবার ও স্বজন এ পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা লাভের দাবি রাখে। অথচ তার মা ও মাসির গ্রেফতার এবং রিমান্ডের মতো ঘটনা তাদের অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করেছে। নেতৃবৃন্দ এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বার বার সরকারকে সতর্ক করে বলছিÑ প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক জামায়াতের লোকরা ছড়িয়ে আছে। মহাজোট সরকারের যাবতীয় অর্জন, বিশেষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য জামায়াত এবং তাদের সহযোগীরা যে বহুমাত্রিক চক্রান্ত চালাচ্ছে কক্সবাজারের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রতিক হামলা তারই বহির্প্রকাশ।’ এ হামলার কারণ অনুসন্ধানের জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের গ্রেফতারের নামে এহেন হয়রানি ও নির্যাতনের দায় মহাজোট সরকারকে বহন করতে হবে। মাধু বড়ুয়া ও আদিতা বড়ুয়াকে কার নির্দেশে এবং কি উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এর তদন্ত প্রয়োজন। রামুর আক্রান্ত ও বিপন্ন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ভেতর সরকারের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি করার প্রয়োজনে উত্তম বড়ুয়া পরিবারের সদস্যদের যে কোন ধরনের হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দান এবং মন্দির বিহার ও বসতবাড়ি দ্রুত পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
তদন্ত রিপোর্টের প্রস্তুতি ॥ রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিহার মন্দিরে সহিংস ঘটনার পর গঠিত চার সদস্যের সরকারী তদন্ত কমিটি তাদের প্রণীত রিপোর্ট এখনও গুছিয়ে আনতে পারেনি। সোম ও মঙ্গলবার কমিটি সদস্যরা ম্যারাথন বৈঠক করে খসড়া রিপোর্টের খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেছে। কারণ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন তথ্য অন্তর্ভুক্ত হতে থাকায় রিপোর্ট প্রদানে বিলম্ব ঘটছে বলে কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে রিপোর্টে প্রশাসনিক অবহেলা এবং গোয়েন্দা ব্যর্থতার বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ রিপোর্টে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টও মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং তাদের তদন্তে পত্রিকার যে সমস্ত রিপোর্টের মিল রয়েছে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশী তাড়ায় নিহত আ’ লীগ নেতার স্ত্রীর মামলা ॥ এদিকে, পুলিশের তাড়া খেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন তার স্ত্রী শিক্ষিকা সফিকা বেগম। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়ের মামলায় সফিকা উল্লেখ করেছেন, রামুর সহিংস ঘটনায় তার স্বামীর নাম মামলায় রয়েছে মর্মে জানিয়ে পুলিশের দুই সোর্স সেলিমের নিকট ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় তার স্বামীকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ১০ অক্টোবর ধাক্কা দিয়ে খরস্রোতা বাঁকখালী নদীতে ফেলে দেয়। ৪দিন পর সেলিমের লাশ বাঁকখালী নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছে- বাংলাবাজার পশ্চিম মুক্তারকুল এলাকার অছিউর রহমানের পুত্র পুলিশের কথিত সোর্স জাহাঙ্গীর আলম ও একই এলাকার উলা মিয়ার পুত্র বশির আহমদ। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের তৎপরতা শুরু করেছে।
উখিয়া-টেকনাফে আইজি ॥ তিন দিনের কক্সবাজার সফরে পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার মঙ্গলবার উখিয়া ও টেকনাফে ক্ষতিগ্রস্ত বিহার, ঘর-বাড়ি ও মন্দির পরিদর্শন করেছেন। ভিক্ষুসহ সংখ্যালঘু লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় উখিয়ায় পৌঁছে তিনি পশ্চিম মরিচ্যা, পশ্চিম রতœা ও রাজাপালং জাদিমুরা বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। পশ্চিম মরিচ্যায় জ্বালিয়ে দেয়া দিপাংকুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে আইজিকে স্থানীয় সাংবাদিকরা রাজাপালং এর খয়রাতি রেজুকুল ও জাদিমোরা বৌদ্ধ বিহার ভাংচুরের ঘটনায় এ পর্যন্তও যে মামলা না হয়নি সে বিষয়ে অবহিত করেন। আইজি এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। পরে তিনি দুপুর দেড়টায় টেকনাফে গিয়ে হোয়াইক্ষ্যং মন্দির পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। উল্লেখ্য, ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ভাংচুর হওয়া স্থানীয় পিনজিরকুল ও খয়রাতি বৌদ্ধ বিহার ভাংচুর হওয়ার ১৭ দিন পার হলেও পুলিশ এ পর্যন্ত মামলা গ্রহণ না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। স্থানীয়দের পরামর্শে স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল কবির ও রুহুল আমিন মেম্বার এজাহার নিয়ে বার বার থানায় ধর্ণা দিলেও উখিয়া থানার ওসি পরে আসার কথা বলে বার বার তাদের ফেরত পাঠিয়েছেন।
রামুতে বামাকার মানববন্ধন ॥ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল (বামাকা)। মঙ্গলবার সকালে রামু উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত বামাকার কেন্দ্রীয় মহাসচিব ড. ফরিদ উদ্দিন ফরিদসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বামাকা কক্সবাজার জেলা শাখা আয়োজিত ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে জেলার দুই শতাধিক মানবাধিকার কর্মী অংশ নেয়। পরে নেতৃবৃন্দ রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধমন্দির পরিদর্শন করেন।
সংস্কার হয়নি মন্দির ॥ দুষ্কৃতকারীদের সহিংস হামলায় ভাংচুর হওয়া উখিয়ার পালংখালী হিন্দু সম্প্রদায়ের একমাত্র উপাসনালয় ভুবেনশ্বরী মন্দির এ পর্যন্তও সংস্কার করা যায়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা আড়ম্বর পরিবেশে পালন করা হবে তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন। উপজেলা প্রশাসন ২ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির মেরামতের জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা: লক্ষ্মণ চন্দ্র। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় একদল দুর্বৃত্ত মন্দিরে হামলা চালিয়ে মূর্তি ও প্রতিমা ভাংচুর করে ও লুটপাট চালায়। ঐ সন্ত্রাসীরা মন্দিরের পার্শ্ববর্তী ধনুরাম শীলের বসতবাড়িটি পুড়িয়ে দেয়।
রোহিঙ্গা জঙ্গীদের হতে ৫ হাজার আইডি কার্ড ॥ একাধিক মৌলবাদী গোষ্ঠীর সহযোগিতায় ইতোপূর্বে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকে বাংলাদেশের নাগরিক দাবি করে ভোটার আইডিকার্ড সংগ্রহ করে ফেলেছে। তারা যে কোন নাশকতামূলক কর্মকা-ে জড়িত হলে বাঁচার জন্য ঐ আইডিকার্ড দেখিয়ে পার পাওয়ার তৎপরতা শুরু করে। কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় ৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা-জঙ্গীর হাতে রয়েছে এ ধরনের জাতীয় পরিচয়পত্র। অনেকে আবার কম্পিউটার থেকেও ভুয়া আইডি বের করে এ দেশের নাগরিক বলে দাবি করে থাকে। রোহিঙ্গা-জঙ্গীদের নিকট থাকা মোবাইল সিম বাতিলের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্রও বাতিলের দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে। কক্সবাজার ও বান্দরবানের অধিকাংশ মাদ্রাসায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়ে অসংখ্য বর্মী মৌলভী বিভিন্ন মাদ্রাসায় চাকরি নিয়ে এদেশে অবস্থান করছে। আবার এদের মধ্যে উগ্রবাদীরা নাশকতামূলক কর্মকা-ে লিপ্ত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.