প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হল শারদীয় দুর্গোৎসব

আনন্দ-বেদনায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বুধবার শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ভক্তরা সজল চোখে আজ বিদায় দিয়েছেন দেবী দুর্গাকে।

সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পূজা মণ্ডম থেকে দূর্গা প্রতিমাকে বুড়িগঙ্গার বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন ঘাটে নেয়া শুরু হয়। পুরোহিতদের মন্ত্র পাঠ শেষে নদীর জলে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া শুরু হয়। এ সময় লাখো ভক্ত শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় তাকে বিদায় জানিয়ে আবারও পরের বছর তার ফেরার অপেক্ষায় দিন গোনা শুরু করেছেন।
শুভ বিজয়ায় সকাল থেকেই ঢাক আর শঙ্খধ্বনিতে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে চলে পূজোর রীতিনীতি পালনের কাজ। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে দেবীর দশমী  পূজা সমাপ্তি ও দর্পণ বিসর্জন হয়।

বিকেলে বিভিন্ন মন্দির থেকে ভক্তদের শোভাযাত্রায় দেবীকে বুড়িগঙ্গা নদীতে নিয়ে আসা হয়। ভক্তরা আবির, ধান, দুর্বা, মিষ্টি দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেন। ঢাকার  বিভিন্ন মন্দিরের ২০১টি প্রতিমা বিভিন্ন সময়ে বিসর্জন দেয়ার মাধ্যমে দশমী পূজোর আয়োজন শেষ হয়।

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণের আহ্বানে দেবী  ৪ দিনের জন্য পিতৃগৃহে আসেন। আজ বিসর্জনের মাধ্যমে পিতৃগৃহ পৃথিবী ছেড়ে দেবী মা দূর্গা আবারো স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন। এক বছর পর আবারো কল্যানের ডাকে দেবী মা পিতৃগৃহ পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

প্রতিমাকে বিদায় জানাতে স্বামীসহ নারায়নগঞ্জ থেকে বুড়িগঙ্গার ঘাটে এসেছিলেন কুমারী দেবী। এ সময় কান্নাভেজা কন্ঠে তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরে মা দূর্গা মাত্র একবারই এই পৃথিবীতে আসেন। সারাবছর মাকে পাওয়া সম্ভব না। তাই যে কটা দিন তিনি এই পৃথিবীতে থাকেন তার পূজো অর্চনার মধ্য দিয়ে ভক্তি দেখাই।’’

সুমন বড়ুয়া বলেন, ‘‘মা আমাদের দেবী। আমরা মাকে ভালবাসি। বছরে একবারই মা আসেন। আবারো অপেক্ষা করছি।’’

বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ ছিল সরকারি ছুটি। বিজয়ার অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য দেশের সবগুলো টেলিভিশনগুলোই ব্যস্ত ছিল। রাজধানীর মন্দিরগুলো ছিল আলোকসজ্জিত।

প্রসঙ্গত, এ বছর সারাদেশে ২৮ হাজারের বেশী মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.