সরাইলে হত্যা-সন্ত্রাস-আইন-শৃঙ্খলায় ছাড় নয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি একেএম ইকবাল আজাদকে যেভাবে খুন করা হয়েছে এবং তার সমর্থকরা যেভাবে প্রতিপক্ষের বাড়ি ও ব্যবসা কেন্দ্রে আগুন দিয়ে 'প্রতিবাদ' করছেন_ কোনোটিই সেখানকার আইন-শৃঙ্খলার জন্য ইতিবাচক নয়।


এ ক্ষেত্রে প্রশাসনও কি যথেষ্ট দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে? প্রশাসনিক শিথিলতাই অনেক সময় প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের সাহস জুগিয়ে থাকে। আমরা মনে করি, যে কোনো মূল্যে সরাইলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে হবে। এই প্রশ্নে সামান্য ছাড় দেওয়া চলবে না। আর যাতে কারও জীবন ও সম্পদ হুমকির মুখে না পড়ে, তা প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হবে। নিহত নেতার সমর্থকরাও দায়িত্বশীল আচরণ করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ইকবাল আজাদ হত্যাকাণ্ড নিঃসন্দেহে ক্ষোভ ও শোক জাগানিয়া নৃশংস ঘটনা। সর্বাংশে নিন্দনীয়। কিন্তু অন্যের ঘরে আগুন দিয়ে কিংবা মহাসড়ক অবরোধ করে তার খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত হবে না। অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সুযোগ-সন্ধানীরা তৎপর হতে পারে এবং তাতে করে আরও বড় সংকটের সৃষ্টি হতে পারে, তা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। সমর্থকরা বরং নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন জারি রাখলে এবং তদন্ত কাজে পুলিশ ও প্রশাসনকে সহায়তা করলে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত ও আটক করা সহজ হবে। প্রশাসনকেও সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করতে হবে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ও সন্দেহভাজনদের সবাই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী। ফলে পরস্পরবিরোধী প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা অমূলক নয়। কিন্তু পুলিশকে কাজ করতে হবে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊধর্ে্ব উঠে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কেউই যাতে ছাড় না পায়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সেদিকে নজর রাখতে বলব আমরা। ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ডকেও সতর্ক হতে হবে। নরসিংদীর পর সরাইলে যেভাবে গৃহদাহে নেতাকর্মী নিহত হলো, তা তাদের রাজনৈতিক চর্চা ও ভবিষ্যতের জন্য শুভ ইঙ্গিত বহন করে না। এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অরাজনৈতিক উপায়ে সরিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। বাড়বে অস্থিতিশীলতাও। সেটা কারও জন্যই কল্যাণকর হবে না।
 

No comments

Powered by Blogger.