যে খবর নাড় দেয়-বাংলাদেশিরা কতটা সৎ?

আপন মনে হাঁটছেন ফুটপাত ধরে। আচমকা চোখে পড়ল একটা মানিব্যাগ। বেশ মোটাসোটা। ভুল করে ফেলে গেছে কেউ একজন। আশপাশে কেউ নেই। হাতে তুলে নিলেন মানিব্যাগটা। ঘেঁটেঘুঁটে দেখলেন, ভেতরে মালিকের নাম-ঠিকানা ও ফোন নম্বর আছে। এখন কী করবেন আপনি?


চটজলদি ফোন করবেন মানুষটাকে? মানিব্যাগ আগের জায়গায় রেখে নির্বিকার হাঁটা ধরবেন? নাকি মানিব্যাগটাকে নিজের মনে করে চুপিসারে পকেটস্থ করবেন?
বেশ কয়েক বছর আগে, বিশ্বখ্যাত সাময়িকী রিডার্স ডাইজেস্ট এ রকমই একটি পরীক্ষা চালিয়েছিল বিভিন্ন দেশে। প্রায় এক হাজার ১০০ মানিব্যাগ তারা ফেলে রেখেছিল রাস্তাঘাটে। সেগুলোর প্রতিটির ভেতর ছিল ৫০ ডলার সমমানের অর্থ। আর ছিল মালিকের ফোন নম্বর। কয়টা ‘বেওয়ারিশ’ মানিব্যাগ ফেরত আসে, সেটাই দেখতে চেয়েছিল তারা। ফলাফলে দেখা গেছে, সততার দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে নরওয়ে ও ডেনমার্ক। এই দুই দেশে প্রতিটি মানিব্যাগই ফেরত মিলেছে। তাদের সততা ছিল শতভাগ। মানিব্যাগ ফেরত দেওয়ার দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল মেক্সিকো (২১ শতাংশ)। প্রতিবেশী দেশ ভারত (৬৫ শতাংশ)। বাংলাদেশে এই পরীক্ষাটি হলে ফলাফল কী হতো? সততার পরীক্ষায় বাংলাদেশ কি খুব লজ্জাজনকভাবে পিছিয়ে থাকত?
‘সততার দৃষ্টান্ত’ খবরটি পড়ে অন্তত মনে হচ্ছে, ‘না’। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৌদি আরব প্রবাসী আবদুল খালেক তাঁর মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ আর পাসপোর্ট হারিয়ে হয়েছিলেন দিশেহারা। পরে খালেকের হারানো জিনিস খুঁজে পেয়ে ফোনে যোগাযোগ করেন সহকারী ফেরিচালক মাহবুব আল হক। সবকিছু ফিরিয়ে দিয়ে যান একদম ঠিকঠাক। (সূত্র: প্রথম আলো, ২ জুন, ২০১২)। বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ হতে পারে, কিন্তু মাহবুবুল আল হকের মতো মানুষেরা এখনো এই দেশেই থাকেন!
—ইকবাল হোসাইন চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.