দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন-ভেজাল ও মানহীন খাবার

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভেজালবিরোধী অভিযানে প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে খাবারে ভেজাল মেশানো এবং মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য বিক্রির ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। ভেজাল মেশানো খাবার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। তাই এই অবস্থা রীতিমতো আতঙ্কজনক।


ঈদ-উৎসবের সময় বিশেষ কিছু খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। ঈদ সামনে রেখে সেসব খাবারে ভেজালের প্রত্যাবর্তন ঘটেছে জোরেশোরে। ভেজালবিরোধী অভিযানে ইতিমধ্যে আমরা তার নজির দেখেছি। এ কারণে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। পয়সা দিয়ে ভোক্তা বিষ নয়, নিরাপদ খাবারই যেন পেতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে সরকারের নজর ও তদারকি জোরদার করা প্রয়োজন।
গত মঙ্গলবারের প্রথম আলোর একাধিক প্রতিবেদনে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট, জয়পুরহাটের কয়েকটি স্থানে ভেজাল মসলা, মেয়াদোত্তীর্ণ ভোজ্যতেল ও সুজি, খাওয়ার অনুপযোগী ডাল বিক্রি এবং মানহীন সেমাই, চিপস ও আইসক্রিম বাজারজাত করার প্রমাণ পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুধু এগুলোই নয়, চালে ইউরিয়া সার ও কৃত্রিম রং, মাছে ফরমালিন, শাকসবজিতে কীটপতঙ্গনাশক ও ক্ষতিকর রং, গুঁড়ো মসলায় ভুসি, কাঠ, বালু, ইটের গুঁড়ো ও বিষাক্ত গুঁড়ো রং, লবণে সাদা বালু, চায়ে করাতকলের গুঁড়ো, মিষ্টি, বিস্কুট ও রুটি প্রস্তুতে বস্ত্রকলে ব্যবহূত রং মেশানোসহ প্রায় সব ধরনের খাবারে ভেজাল মেশানোর প্রবণতা দেখা যায়। খাদ্যসামগ্রী তৈরির সময় জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকা দরকার। কিন্তু অধিক মুনাফার আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিষয়টি পুরোপুরি অগ্রাহ্য করে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করছেন। সমাজের কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে দেশবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যাহত হবে, সেটা তো চলতে পারে না।
এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল ও মানহীন খাবার তৈরি, প্রক্রিয়াকরণ ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত কিছু কারখানা ও দোকানমালিকের বিরুদ্ধে জরিমানা ও দণ্ড প্রদান করে আসছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই ভূমিকা ভেজাল প্রতিরোধে ইতিবাচক। আমরা চাই, অন্তত ঈদের আগ পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকুক। তবে মনে রাখা দরকার, শুধু এ ধরনের অভিযানই ভেজাল প্রতিরোধে যথেষ্ট নয়। সিটি করপোরেশন, বিএসটিআই, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিলে সমন্বিতভাবে একটি টেকসই ব্যবস্থা দাঁড় করাতে হবে। ভেজালকারী প্রতিষ্ঠান একেবারে বন্ধ করে দেওয়াসহ জরিমানা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বাড়ানো প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.