বাসের জানালায় মাথা, প্রাণ গেল যুবকের

নেছার আলী (২৭)। বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বিভিন্ন দৃশ্য দেখছিলেন। যেকোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে ভেবে দুই খালাতো ভাই তাঁকে সাবধানও করেন। কিন্তু পাত্তা দেননি নেছার। আর এর খেসারত তাঁকে দিতে হলো জীবন দিয়ে। রাস্তার পাশে থাকা পিলারের একটি লোহার পাতের আঘাতে থেঁতলে যায় নেছারের মাথা।


বেরিয়ে আসে মগজ। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নেছার আলীর খালাতো ভাই সায়েম ও বাহার জানান, নেছার নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি এলাকার একটি কারখানায় কাজ করতেন। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকালে নেছার সাভারে খালাতো বোন মণিহারের বাসায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে লাব্বাইক পরিবহনের একটি বাসে সায়েম ও বাহারের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীতে আরেক খালাতো বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। দুপুরে দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় সায়েম ও বাহারসহ আশপাশের যাত্রীরা হঠাৎ একটি শব্দ পান। এরপর তাঁরা দেখেন, নেছারের মাথা ও ঘাড় ভেঙে থেঁতলে আছে। অন্য যাত্রীদের সহায়তায় স্বজনরা তাঁকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসকরা নেছারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নেছারের বাবার নাম মো. হানিফ। গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনের লেতরা বাজার। দুই ভাই চার বোনের মধ্যে নেছার ছিলেন তৃতীয়। নেছারের দুই খালাতো ভাই দুঃখ করে বলেন, সাবধান করার পরও নেছার জানালা দিয়ে মাথা বের করে এটা-সেটা দেখছিলেন।
গতকাল আরেক সড়ক দুর্ঘটনায় বাড্ডার শাহাজাদপুরে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী (৪০)। এদিকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (৩৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, যুবকের মৃত্যু রহস্যজনক। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। অন্যদিকে ভাটারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে মিল্লাত হোসেন (১৮) নামে এক শ্রমিক।
খোকন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী আহত হন। পথচারীদের সহায়তায় খোকন ওই নারীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত নারীর পরনে ছিল গোলাপি রঙের শাড়ি।
এদিকে ভাটারায় নিহত শ্রমিক মিল্লাতের সহকর্মী আবুল বাসার জানান, গতকাল সকাল ৯টার দিকে বসুন্ধরার জি-ব্লকে নির্মাণাধীন একটি ভবনের নিচ তলায় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান মিল্লাত। ওই ঘটনায় নূর আমিন নামে আরেক শ্রমিক (২২) আহত হন। মিল্লাতের বাবার নাম মনির হোসেন। বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর।
অন্যদিকে শাহবাগ থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে হাইকোর্ট মাজারসংলগ্ন ফুটপাতের পাশে থেকে আজ্ঞাতপরিচয় যুবককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরনে ছিল চেক শার্ট ও চেক লুঙ্গি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাম পায়ের গোড়ালিতে ও মাথার পেছনে জখম আছে। নিহত যুবককে হত্যার পর গুম করা হয় বলেও ধারণা করছে পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.