এই বর্ষায়ও পানি জমে যাবে নগরে

বর্ষার আগে প্রথম বর্ষণে চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় পানি না জমলেও নগরের নিচু এলাকাগুলো যথারীতি পানিতে নিমজ্জিত হয়। কিছু নতুন এলাকায়ও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এদিকে নগরে সিটি করপোরেশন ও চউকের (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) উদ্যোগে যে উন্নয়নকাজ চলছে, তাও যথাসময়ে শেষ হচ্ছে না।


ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমেও নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে না বলেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব উদ্যোগে নগরের খাল-নালা খনন ও সংস্কারকাজ চলছে। এতে খরচ পড়ছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার খাল খনন ও সংস্কার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃষ্টির পানি যেভাবে সরে গেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় বর্ষা আসার আগেই অবশিষ্ট কাজ করার ব্যাপারে আমরা নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’ মেয়র জানান, চকবাজার ও কাতালগঞ্জ এলাকায় জলাবদ্ধতা কমাতে হিজরা খালের পানির একটি অংশ পাঁচলাইশ দিয়ে মির্জাখালে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী শুকনো মৌসুম শুরু হলেই পাঁচলাইশ থেকে মির্জাখাল পর্যন্ত নতুন একটি খাল খনন করা হবে। তবে এ মুহূর্তে হিজরা খালে থাকা গ্যাস ও পানির পাইপলাইনগুলো উঁচু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে পানি দ্রুত সরে যেতে পারে।
জানা যায়, এপ্রিল মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহের বৃষ্টিপাতের ফলে বাকলিয়া, আগ্রাবাদ ও হালিশহরের নিচু এলাকা আগের মতোই পানিতে ডুবে যায়। আবার বৃষ্টিপাত শেষে যথারীতি নেমেও যায়। তবে এবার কাপাসগোলা ও মুরাদপুরে নতুন করে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাপাসগোলা সংস্কারের কাজ করছে। ফলে ওই সড়কের দুই পাশের নালাগুলো এখনো পানি সরে যাওয়ার মতো উপযোগী হয়নি। তাই ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। একইভাবে অলি খাঁ মসজিদ মোড় থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়কটির সংস্কারকাজ চলার কারণে জাতিসংঘ পার্ক এবং এর আশপাশের খোলা জায়গা এমনকি সড়কের ওপরও পানি জমে যায়।
জলাবদ্ধতা নিয়ে কর্মরত সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী সুদীপ বসাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুরাদপুর থেকে হাটহাজারী সড়কের ভাঙারির দোকানগুলো নালার ওপর মালামাল রেখে দেয়। এ জন্য বৃষ্টির পানি ওই সব নালা দিয়ে সরে যেতে পারেনি। এতে অপ্রত্যাশিতভাবে মুরাদপুরে পানি জমে যায়। আমরা বর্ষা শুরুর আগেই ওই সব নালা পরিষ্কারের চেষ্টা করছি।’
চাক্তাই এলাকার বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির সময় জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় চাক্তাই খালপারের লোকজনের আগের মতোই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া নগরের নিচু এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এসব এলাকায় বাংলাদেশ পৌর উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএমডিসি) অর্থায়নে প্রায় চার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। তবে বর্ষার আগে এসব কাজ পুরোপুরি শেষ হচ্ছে না। ফলে ওই সব এলাকার নালাগুলোও পানি সরে যাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরজুড়ে উন্নয়নকাজ চলছে। ফলে অনেক জায়গার পানি সরে যাওয়ার মতো অবস্থাও নেই। বর্ষার আগেই এসব কাজ শেষ না হলে নতুন করে এ জায়গাগুলোতেও জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে বলে এলাকার লোকজনের আশঙ্কা।

No comments

Powered by Blogger.