হাতির প্রাণসংহার-কেন এই হৃদয়হীনতা?

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বনাঞ্চলে একটি বন্য হাতিকে গুলি করে মেরে ফেলার খবরটি একশ্রেণীর মানুষের হৃদয়হীন মনোবৃত্তির স্মারক। বুধবার সমকালে 'হাতির প্রাণসংহার' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিতে কে বা কারা এর জন্য দায়ী_ তা অকাট্যভাবে প্রকাশ না পেলেও এটি পশু শিকারিদের কাণ্ড বলে ধারণা করা যায়।


হাতিটির গায়ে একাধিক গুলির চিহ্ন ছিল। অথচ সংরক্ষিত এই বনাঞ্চল পশু চারণের জন্য নিরাপদ থাকার কথা। বলা হচ্ছে, জনপদের ওপর গত কিছুদিন ধরে হাতির দল চড়াও হওয়ার কারণে এলাকার কোনো সংক্ষুব্ধ পরিবার হাতিটিকে গুলি করে মেরেছে। কিন্তু সমকালের প্রতিবেদক সুনির্দিষ্টভাবেই জানতে পেরেছেন, ওই এলাকায় সহসা লোকালয়ে হাতির উপদ্র্রবের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এতেই বোঝা যায়, এই অবোধ পশুটিকে মানুষের শান্তি ও জীবনের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী প্রতিপন্ন করে হত্যাকারীরা তাদের হৃদয়হীন আচরণকে আড়াল করতে চাইছে। এটা ঠিক যে, কোথাও কোথাও হাতির দল খাবার না পেয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তখন বনকর্মীদের দায়িত্ব পড়ে ওই বন্য হাতির দলকে ফের সংরক্ষিত বনে চলে যেতে সাহায্য করা। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পশুর প্রাণসংহার নিষিদ্ধ। অথচ লোহাগাড়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে দিনের বেলায় হাতিটিকে গুলি করে মেরে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।
ওই অঞ্চলে হাতিকে গুলি করে মেরে ফেলার নজির নেই। সাতকানিয়ায় একটি হাতি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এবং অপর একটি হাতি পাহাড় থেকে পড়ে মারা যাওয়া ছাড়া মানুষের হাতে মৃত্যুর কোনো ঘটনা নেই। বলা যায়, এলাকাটিতে নিরুপদ্রবভাবেই বন্য হাতির পাল বিচরণ করত। সোমবার গুলি করে একটি হাতিকে মেরে ফেলার ঘটনাটি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এ অপরাধ কোনো অবৈধ শিকারি দলের পক্ষেই করা সম্ভব। আমরা বন্য পশুর চারণক্ষেত্রগুলো নিরাপদ রাখতে বন কর্মকর্তা ও এলাকার জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে ধিক্কার জানাই পশু হত্যাকারীদের।

No comments

Powered by Blogger.