মায়ের কান্না থামে না

ইলিয়াস আলীর বৃদ্ধা মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন এবং কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। নিজের বুকে হাত চাপড়ে বলছেন, 'আমার পুয়ারে আনিয়া দেও।' পরিবারের পক্ষ থেকে 'নিখোঁজ' ইলিয়াস আলীকে ফিরে পাওয়ার জন্য গতকালই কোরআন খতম পড়ানো হয়। ১০টি গরু জবাই করে মাংস গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়।


এদিকে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার খবরে তাঁর নিজ গ্রাম বিশ্বনাথ উপজেলার রামধানাসহ আশপাশ গ্রামের মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। স্বজনরা আহাজারি করছেন। একই সঙ্গে তাঁদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অজানা আতঙ্ক। সবাই ক্ষুব্ধ ও উৎকণ্ঠিত হলেও মুখ খুলে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
আমাদের বিশ্বনাথ প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী শিপন জানান, গতকাল দুপুরে ইলিয়াস আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড়। সবার মুখে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের ছাপ। হঠাৎ করে ইলিয়াস আলী এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবেন- এটা যেন কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। সবার প্রশ্ন একটাই, কী হয়েছে ইলিয়াস আলীর?
সকাল থেকে দলের নেতা-কর্মী ও গ্রামবাসী তাঁর বাড়িতে ভিড় করেন। তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো কিছুই যেন কাউকে শান্ত করতে পারছিল না। এত মানুষের উপস্থিতি তবু গোটা বাড়িতে এক ধরনের নীরবতা।
সন্তানের কথার প্রসঙ্গ উঠতেই ইলিয়াস আলীর বৃদ্ধা মা সূর্যবান বিবি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁর বুকফাটা আর্তনাদে গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।
ইলিয়াস আলীর ভাই বড় আওলাদ আলী বলেন, 'ঘটনাটি জানার পর থেকে আর চিন্তা করতে পারছি না, কী করব। আমি আমার ভাইয়ের খবর জানতে চাই। সে কোথায় আছে, কেমন আছে জানতে চাই। সরকারের কাছে আবেদন করছি আমার ভাইকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।'
গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন, 'এভাবে ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়া কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁকে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।'

No comments

Powered by Blogger.