জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৮০ লাখজনসংখ্যা ১৪ কোটি ৮০ লাখ

সর্বশেষ আদমশুমারির সময় প্রায় চার শতাংশ মানুষ গণনা থেকে বাদ পড়েছিল। বাদপড়া মানুষ সমন্বয় করলে প্রাথমিকভাবে ‘আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১’ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৮০ লাখ।গতকাল সোমবার ‘শুমারি-পরবর্তী যাচাইয়ের (পোস্ট এমিউনারেশন চেক—পিইসি) চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ’ উপলক্ষে


আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) নিজ কার্যালয়ে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক মুস্তফা কে. মুজেরী বলেন, আদমশুমারির প্রাথমিক ফলাফলে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ২৩ লাখ। শুমারি-পরবর্তী যাচাইয়ে দেখা গেছে, তিন দশমিক নয় শতাংশ অর্থাৎ ৫৭ লাখ মানুষ গণনা থেকে বাদ পড়েছিল। ওই সংখ্যা সমন্বয় করলে দেশের মানুষ প্রাথমিকভাবে ১৪ কোটি ৮০ লাখ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত বছর ১৫ থেকে ১৯ মার্চ সময়ে সারা দেশে আদমশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য সংগ্রহ করে। গত বছর জুলাইয়ে বিবিএস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে। তখন বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের গণনাকৃত জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার এবং পিইসির ফলাফল সমন্বয় করলে জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিবিএসের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা জানার জন্য আগামী জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন মোট জনসংখ্যা আরও কিছু বাড়তে পারে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণনাকারীদের ব্যবহার করা বইয়ের মলাটের ওপরে থাকা পৃষ্ঠার তথ্য দিয়ে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছিল। এখন প্রতিটি পৃষ্ঠার তথ্য পৃথকভাবে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য শুমারি-পরবর্তী যাচাইয়ের কাজ বিআইডিএসকে দেওয়া হয়েছিল।
মুস্তফা মুজেরী সাংবাদিকদের বলেন, বিআইডিএস গত বছরের ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল ২৮০টি নমুনা এলাকায় (১৪০টি গ্রাম ও ১৪০টি শহর) যাচাই জরিপ করে। এতে দেখা গেছে, পল্লি এলাকায় তিন দশমিক আট, পৌরসভা এলাকায় পাঁচ দশমিক তিন ও উপজেলা সদরগুলোতে চার শতাংশ মানুষ গণনা থেকে বাদ পড়েছিল। আর সিটি করপোরেশনগুলোতে তিন দশমিক নয় শতাংশ মানুষ গণনা থেকে বাদ পড়ে।
বিআইডিএস ও বিবিএস এই দুই প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক দাবি করেন, পিইসি একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। নিয়মিত আদমশুমারি হয় এমন প্রতিটি দেশে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, গণনায় চার শতাংশ ভুল থাকা গ্রহণযোগ্য। ২০০১ সালের শুমারি-পরবর্তী যাচাইয়ে ভুল ছিল পাঁচ দশমিক ৯৮ শতাংশ। মুস্তফা মুজেরী বলেন, শুমারির সংগৃহীত তথ্যের গুণগতমান অতীতের তুলনায় ভালো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, চূড়ান্ত ফলাফলে দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৮০ লাখের বেশি হবে। তিনি বলেন, জনসংখ্যা বাড়িয়ে বা কমিয়ে বিবিএস বা বিআইডিএসের কোনো লাভ নেই।
গত বছর জুলাই মাসে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের সময় বিবিএস বলেছিল, দেশে বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এক দশমিক ৩৪ শতাংশ। খানার সংখ্যা তিন কোটি ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০। খানার গড় সদস্যসংখ্যা চার দশমিক চার। আর প্রতি বর্গকিলোমিটারে মানুষ বাস করে ৯৬৪ জন।

No comments

Powered by Blogger.