নববর্ষে মিষ্টিমুখ

উপলক্ষটা আনন্দের, মিষ্টিমুখ তো হবেই। তবে সেটা বাড়িতে তৈরি হলে তো মজাটাই অন্য রকম। এখনই বানিয়ে রেখে দিতে পারেন কয়েক রকমের লাড্ডু। দেখুন ফাতিমা আজিজের দেওয়া রেসিপিগুলো নারকেলের শাহি লাড্ডু
উপকরণ: নারকেল কোরানো ২ কাপ অর্থাৎ বড় একটি নারকেল, ঘি ২ টেবিল-চামচ, কনডেন্সড মিল্ক আধা কাপ,


কাজুবাদাম ২ টেবিল-চামচ (টেলে আধা ভাঙা), কিশমিশ ২ টেবিল-চামচ, আখরোট ২ টেবিল-চামচ (টেলে আধা ভাঙা), মাওয়া আধা কাপ, টেলে নেওয়া এলাচগুঁড়া আধা চা-চামচ।
প্রণালি: কুরানো নারকেল ফ্রাইপ্যানে ঘি গরম করে অল্প আঁচে ভেজে নিন কিছুক্ষণ।
তারপর চুলার আঁচ মাঝারি করে এতে চিনি ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়তে হবে। যখন আঠালো হয়ে আসবে, তখন আখরোট, কাজুবাদাম ও কিশমিশ দিয়ে নাড়তে হবে।
এবারে নারকেলের সঙ্গে মাওয়া দিয়ে ভালো করে মেশাতে ও নাড়তে হবে।
একেবারে মাখা মাখা হয়ে এলে এলাচগুঁড়া দিয়ে মিশিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন।
কিছুটা ঠান্ডা হলে দুই হাতের তালুতে পানি মেখে নারকেল একটু একটু করে নিয়ে গোল করে লাড্ডু তৈরি করুন।
নারকেলের লাড্ডুটা বেশি দিন সংরক্ষণ করা যাবে না, তবে বায়ুরোধী বক্সে তিন-চার দিন পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরে রেখে খাওয়া যাবে। এই লাড্ডু বৈশাখের বিকেলে খেলে দারুণ ভালো লাগবে।

বেসনের লাড্ডু
উপকরণ: বুটের ডাল থেকে ভাঙিয়ে নেওয়া বেসন-২ কাপ, কাজুবাদাম টেলে নিয়ে হালকা ভেঙে নিতে হবে ৭টি, ঘি আধা কাপ, পাটায় পিষে চিনিগুঁড়া করে নিতে হবে ১ কাপ, এলাচ টেলে গুঁড়া করা আধা চা-চামচ, রুপালি তবক সাজানোর জন্য।
প্রণালি: ২ কাপ বেসন চালুনি দিয়ে চেলে আলাদা করে রাখুন। কড়াইয়ে ঘি গরম করে চুলার জ্বাল কমিয়ে বেসন ভালো করে ভাজতে হবে। ভাজতে ভাজতে যখন সুন্দর ঘ্রাণ ছড়াবে, তখন কাজুবাদাম ও এলাচগুঁড়া দিয়ে নেড়ে বেসনের সঙ্গে মিশিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে সামান্য ঠান্ডা করে নিন। বেসন ভাজার জন্য আনুমানিক ৩০ মিনিট লাগবে। তবে যেন পুড়ে না যায়, তাই অনবরত নাড়তে হবে। ভাজা বেসনে চিনি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
সবশেষে হাতের তালুতে বেসনের মিশ্রণ নিয়ে লাড্ডুর আকারে তৈরি করুন। ওপরে রুপার তবক ছড়িয়ে পরিবেশন।
এই লাড্ডু আগে বানিয়ে বায়ুরোধী বক্সে রেখে দিন। পরিবেশনের আগে তা পরিবেশন পাত্রে বরে করে সাজিয়ে রাখুন।
বেসনের লাড্ডু দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বায়ুরোধী বাক্সে ফ্রিজে রেখে দিলে ভালো থাকবে। ফ্রিজ থেকে বের করে মাইক্রো ওয়েভে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড গরম করে পরে খাবেন।

মুগডালের লাড্ডু
উপকরণ: মুগডাল ৫০০ গ্রাম, মাখন ২০০ গ্রাম, চিনি ২ কাপ (পাটায় পিষে গুঁড়া করা)। গুঁড়া দুধ (যদি প্রয়োজন হয়) আধা কাপ।
প্রণালি: মুগডাল ঝেড়ে-বেছে, ধুয়ে ৭-৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর আবার ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
চুলায় আঁচ কমিয়ে কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে মুগডাল ভেজে নিন। বেশ ভালোভাবে ভাজা হলে ঠান্ডা করে পাটায় মিহি গুঁড়া করে নিন। একবার চেলে নিয়ে চালুনিতে যে অবশিষ্টাংশ থাকবে, তা আবারও মিহি করে পিষে নিন।
কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে মাখন গরম করে ডালের গুঁড়া ভালো করে ভেজে নিন। লালচে হয়ে এলে চুলা বন্ধ করে গুঁড়া করা চিনি মিশিয়ে নাড়তে হবে। তারপর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে গুঁড়া দুধ মিশিয়ে নিন। চুলা থেকে নামিয়ে হাতের তালুতে একটু একটু করে নিয়ে লাড্ডুর আকারে তৈরি করে পরিবেশন পাত্রে রাখুন। ইচ্ছে হলে একটু মাওয়া ছিটিয়ে দিতে পারেন।
মুগডালের লাড্ডুও বেসনের লাড্ডুর মতো একইভাবে রেফ্রিজারেটরে রেখে ১০-১২ দিন সংরক্ষণ করা যাবে।

গাজরের শাহি লাড্ডু
উপকরণ: গাজর ৫০০ গ্রাম, ঘি সিকি কাপ, চিনি ১ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ১ কাপ, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, এলাচগুঁড়া আধা চা-চামচ (টেলে গুঁড়া করা), কিশমিশ ২ টেবিল-চামচ, বাদামকুচি ২ টেবিল-চামচ, পেস্তাকুচি ২ টেবিল-চামচ।
প্রণালি: গাজর ধুয়ে ছিলে নিন। কুরুনিতে মিহি ঝুড়ি করুন। ফ্রাইপ্যানে ঘি গরম করে ঝুড়ি করা গাজর মাঝারি আঁচে ৫ থেকে ১০ মিনিট ভাজুন। এবার চুলার আঁচ কমিয়ে ঢেকে রাখুন। পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা খুলে কিছুক্ষণ নেড়ে আবার ঢেকে রাখুন। ভাপে গাজর সেদ্ধ হয়ে এলে চিনি ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন।
নাড়তে নাড়তে যখন শুকিয়ে আঠালো হয়ে আসবে, তখন কিশমিশ, বাদামকুচি, পেস্তাকুচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। এলাচগুঁড়া ও গুঁড়া দুধ দিয়ে ভালো করে নেড়ে গাজরের সঙ্গে মেশাতে হবে। সম্পূর্ণভাবে মিশে গেলে নাড়তে যখন একটু কষ্ট হবে বা ভারী মনে হবে, তখন চুলা থেকে নামিয়ে নিন। গরম থাকতেই একটি পাত্রে উঠিয়ে লাড্ডুর জন্য আলাদা ভাগে রাখুন।
হাতে পানি লাগিয়ে একেকটি ভাগ তালুতে নিয়ে লাড্ডুর আকারে তৈরি করে পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে রাখুন। ঠান্ডা হলে লাড্ডু পরিবেশন করুন।
এই লাড্ডু পাঁচ থেকে সাত দিন বায়ুরোধী বক্সে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। তবে ফ্রিজ থেকে বের করে ২০ সেকেন্ড মাইক্রো ওভেনে গরম করে পরিবেশন করতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.