সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর কর্তন-গ্রাহক হয়রানি বন্ধ করুন

সরকার চলতি অর্থবছর থেকে পেনশন ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদ বা মুনাফার ওপর পাঁচ শতাংশ উৎসে কর আরোপ করেছে, যা ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। কিন্তু জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা ১ জুলাইয়ের আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের ওপরও অনুরূপ উৎসে কর কেটে নিচ্ছেন নির্দেশনা না পাওয়ার দোহাই দিয়ে।

ফলে বিনিয়োগকারীরা কেবল হয়রানির শিকারই হচ্ছেন না, আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোয় অর্থ ও বাণিজ্য পাতায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যাতে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর কথাও রয়েছে।
প্রশ্ন হলো, সরকার যেখানে উল্লিখিত দুটি সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর আরোপ করেছে ১ জুলাই থেকে, সেখানে জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তর কীভাবে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর কেটে নেয়? নিশ্চয়ই সরকারের সিদ্ধান্তটি ভূতপেক্ষ ছিল না। জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের হাতে নির্দেশনা না আসায় তাঁরা উৎসে কর বাদ দিতে পারছেন না। অথচ গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১ জুলাইয়ের আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের ওপর এই উৎসে কর নেওয়া যাবে না। গত অর্থবছরে কয়েকটি সঞ্চয়পত্রের ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর নেওয়া হলেও পেনশন সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্রের ওপর কোনো উৎসে কর ছিল না। কর্মকর্তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন, আগের এসআরওতে (বিশেষ নির্দেশ) কোন বছরের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর কাটা হবে, তা বলা হয়নি। নতুন এসআরও এলে গ্রাহকদের পাওনা-দাওনা সমন্বয় করা হবে। এ মৌখিক আশ্বাস লাখ লাখ গ্রাহককে আশ্বস্ত করবে না।
এর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাজে সমন্বয় নেই এবং কর্মকর্তারাও অর্পিত দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে উদাসীন। এরই মধ্যে অর্থবছরের একটি মাস পার হতে চলেছে। এ সময়েও জাতীয় সঞ্চয়পত্র পরিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে সরকারের এসআরও না পৌঁছানোর কী যুক্তি থাকতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘আজ-কালের’ মধ্যে সমস্যার সুরাহা হওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু এত দিনে হলো না কেন?
আমরা আশা করব, অনতিবিলম্বে এসআরওটি জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের প্রতিটি শাখায় পৌঁছানো হবে এবং গ্রাহকদের হয়রানির অবসান ঘটবে।

No comments

Powered by Blogger.