ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাক-আবদুল কাদেরের আইনি লড়াই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবদুল কাদের দীর্ঘ ভোগান্তির পর মিথ্যা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অপরাধে আদালত রাজধানীর খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলম বাদশাকে এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩০ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দিলে গত বুধবার

এসআই আলম বাদশা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির হয়ে জরিমানার টাকা জমা দিয়েছেন। এটি একটি স্বস্তির খবর এই কারণে যে এ দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য কোনো অপরাধ করলে তাঁর বিচার ও শাস্তির ঘটনা কম ঘটে। এসআই আলম বাদশা একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেই অপরাধ করে পার পেলেন না—এই দৃষ্টান্ত একটি বার্তা বহন করে। এর পর থেকে এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের সদস্যরা সতর্ক থাকার চেষ্টা করবেন বলে আশা জাগে।
নিরীহ শিক্ষার্থী আবদুল কাদের গত বছরের জুলাই মাসে বিনা অপরাধে খিলগাঁও থানার পুলিশের সদস্যদের হাতে যে নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক লেখালেখি হয়েছে। খিলগাঁও থানার তৎকালীন ওসি হেলালউদ্দীন নিজের কক্ষে কাদেরকে নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। তারপর কাদেরের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখা ও ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগ এনে দুটি মামলা করে পুলিশ। গ্রেপ্তার দেখায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি গাড়ি ছিনতাইয়ের মামলায়।
মিথ্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলো থেকে কাদের অব্যাহতি পেয়েছেন, কিন্তু তাঁর ওপর একজন পুলিশ কর্মকর্তা যে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছেন, তার বিচার তিনি এখনো পাননি। খিলগাঁও থানার তৎকালীন ওসি হেলালউদ্দীনের বিরুদ্ধে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী মামলা করেছেন। ওসি হেলালউদ্দীনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলাও চলছে। যত দ্রুত সম্ভব এ দুটি মামলার নিষ্পত্তি অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ব্যক্তি নাগরিক হিসেবে কাদেরের ন্যায়বিচার পাওয়া এবং সমাজে আইনের শাসনের দৃঢ় প্রতিষ্ঠার স্বার্থে এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া একান্ত জরুরি।

No comments

Powered by Blogger.