ফিরে দেখা ২০১১: হা রা য়ে ছি তাঁ রে

বীর চৌধুরী কবীর চৌধুরী—প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদক। বাংলা একাডেমী, একুশে পদক এবং স্বাধীনতা দিবস পদক পাওয়া এই জাতীয় অধ্যাপক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। শতাধিক বইয়ের লেখক, যুক্ত ছিলেন দেশের অন্যতম সব আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে। এ বছরের শেষে, ১৩ ডিসেম্বর তিনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। অজিত রায় ও আমার দেশের মাটি এবং একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার মতো


গানগুলো যতবার বাজবে, ততবার আমরা স্মরণ করব তাঁকে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক অজিত রায়। সংগীতশিল্পী এবং সুরকার হিসেবেও বরেণ্য। চার দশক ধরে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বিচরণ করেছেন এই মানুষটি। কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতারে। পেয়েছেন একাধিক সম্মাননা। ১৯৩৮ সালের ২৯ জুন জন্মেছিলেন ব্রিটিশ ভারতের রংপুরের উলিপুরে। এ বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।

মোহাম্মদ কিবরিয়া
বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ মোহাম্মদ কিবরিয়া। জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে, ১৯২৯ সালের ১ জানুয়ারি। চারুকলায় স্নাতক করেন কলকাতা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে। ১৯৫৪ সালে যোগ দেন ঢাকা আর্ট কলেজে (পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ)। সরকারি বৃত্তি নিয়ে চারুকলায় উচ্চতর পড়াশোনা করেন জাপানের টোকিওতে। সেখানে থাকাকালীন, ১৯৫৯ সালে টোকিওতে অনুষ্ঠিত প্রথম তরুণ শিল্পী প্রদর্শনীতে পেয়েছিলেন ‘স্টারলেম’ পুরস্কার। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট পদকও আছে তাঁর নামের পাশে। এ ছাড়া একুশে ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারের মতো সম্মাননাও জানানো হয় এই বরেণ্য শিল্পীকে। দেশে ও দেশের বাইরে একাধিক স্মরণীয় এবং আলোচিত প্রদর্শনী করেছিলেন মোহাম্মদ কিবরিয়া। এ বছরের ৭ জুন ৮২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।

আবদুর রাজ্জাক
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ১ আগস্ট। শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যার এই মানুষটির রাজনৈতিক জীবন পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে। ছাত্রজীবন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ সব আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন তিনি। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিল তাঁর অগ্রণী ভূমিকা। নব্বইয়ের দশকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনেও তিনি ছিলেন উজ্জ্বল মুখ। এ বছরের একদম শেষলগ্নে, ২৩ ডিসেম্বর তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে।

আজম খান
‘গুরু’ বললে তাঁর ছবিটাই চোখে ভাসে। তাঁর গলা থেকেই বাংলাদেশে পপ কিংবা ব্যান্ডসংগীতের শুরু। পপগুরু আজম খান জন্মেছিলেন ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। ‘বাংলাদেশ (রেললাইনের ওই বস্তিতে)’, ‘ওরে সালেকা, ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’ এবং ‘অনামিকা’ গানগুলো তাঁকে দিয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য, সম্মান। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন এই শিল্পী। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট মাঠেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। শেষ জীবনে দুরারোগ্য ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন বেশ কিছুদিন। অবশেষে ভক্তদের কাঁদিয়ে তিনি বিদায় নিলেন এ বছরের ৫ জুন।

No comments

Powered by Blogger.