আর্জেন্টিনার হতাশা

বার্সেলোনার মেসি এবং আকাশি-নীল জার্সির মেসি এক নয়_ তা যেন আরও একবার প্রমাণিত হলো। বার্সেলোনার জার্সিতে মেসি সফল আর আর্জেন্টিনার জার্সিতে ব্যর্থ_ এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আর এতেই বলিভিয়ার বিপক্ষে নিজেদের মাঠে আবারও পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হলো আর্জেন্টিনাকে। গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকায় নিজেদের মাঠে বলিভিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। গত শুক্রবার বিশ্বকাপ বাছাইয়েও সেই বলিভিয়াই আর্জেন্টিনাকে হতাশায় ডুবিয়েছে। এবারও আর্জেন্টিনাকে জয় পেতে দেয়নি বলিভিয়া।


আবারও পয়েন্ট ভাগাভাগি। ১-১ গোলে অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়েছে ম্যাচটি। এ ড্রর ফলে ৩ ম্যাচ শেষে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আর্জেন্টিনা সেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা ও প্যারাগুয়েরও সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। ৩ ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে উরুগুয়ে রয়েছে শীর্ষে। শুক্রবার উরুগুয়ে ৪-০ গোলে হারিয়েছে চিলিকে। চারটি গোলই করেছেন লুইস সুয়ারেজ। এদিন অনুষ্ঠিত অন্য এক ম্যাচে প্যারাগুয়ে ২-১ গোলে ইকুয়েডরকে হারায়। এছাড়া কলাম্বিয়া ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে।
লাভেজ্জির গোলে রক্ষা পেল আর্জেন্টিনা
ভেনিজুয়েলার কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর এ ম্যাচে জয়ের জন্য উম্মুখ হয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। যদিও ইনজুরির কারণে রিয়াল মাদ্রিদের অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং ম্যানচেস্টার সিটির সার্জিও আগুয়েরো মাঠে নামতে পারেননি; তার পরও আক্রমণভাগ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলার। লিওনেল মেসির সঙ্গে ছিলেন গঞ্জালো হিগুয়াইন; কিন্তু বলিভিয়ার জমাট রক্ষণভাগের বিপক্ষে তারা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। যেসব আক্রমণ মাঝমাঠ থেকে তৈরি হয়েছে, তা বলিভিয়ার রক্ষণভাগে এসে থমকে গেছে; কিন্তু যে রক্ষণভাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল সাবেলার সে রক্ষণভাগই তাকে ডোবাল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর খেলা শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৩০ হাজার দর্শককে থমকে দেন বলিভিয়ার মার্সেলো মার্টিন্স। রক্ষণভাগের ভুলকে কাজে লাগিয়ে মার্টিন্স দলকে এগিয়ে নেন। মার্টিন ডেমিকেলিসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সের মধ্যে দু'বার তাকে ড্রিবলিংয়ে পরাভূত করে মার্সেলো যে শটটি নেন, তা গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোকে কোনো সুযোগ না দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পর আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এটা বলিভিয়ার প্রথম গোল। তবে গোলের এ ভারটা বেশিক্ষণ বইতে হয়নি আর্জেন্টিনা। চার মিনিট ব্যবধানে বদলি খেলোয়াড় স্ট্রাইকার ইজিকুয়েল লাভেজ্জি সমতা ফিরিয়ে আনেন। মাঠে নেমে দ্বিতীয়বার বল পেতেই দলের মাঝে স্বস্তির পরশ বইয়ে দেন। মেসির পাস থেকে বল পেয়ে লাভেজ্জির উদ্দেশ্যে লম্বা থ্রু পাঠিয়েছিলেন ফার্নান্দো গাগো। বলিভিয়ার আগুয়ান ডিফেন্ডার বলের কাছাকাছি আসার আগে লাভেজ্জি বাঁ পায়ের জোরাল শটে বলিভিয়ার গোলরক্ষককে পরাভূত করেন।
সুয়ারেজের হ্যাটট্রিক
দুরন্ত যাত্রা অব্যাহত রয়েছে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। ইনজুরির কারণে দিয়েগো ফোরলান মাঠে না থাকার অভাবটা চিলির বিপক্ষে এ ম্যাচে বুঝতেই দেননি লুইস সুয়ারেজ। তার চমৎকার পারফরম্যান্স উরুগুয়েকে এনে দেয় বড় জয়। ৪-০ গোলে পাওয়া এ জয়ে চারটি গোলই করেন সুয়ারেজ। যদিও প্রথম গোল পেতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নদের। বিরতির ৩ মিনিট আগে প্রথম গোলের দেখা পায় উরুগুয়ে। আর বিরতির আগ মুহূর্তে সুয়ারেজ দ্বিতীয় গোলটি করেন। বিরতির পর পুরো ম্যাচটাকে 'ওয়ান ম্যান শো'তে পরিণত করেন সুয়ারেজ। এ সময় আরও দুই গোল করে হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করার কৃতিত্ব দেখান। এ চার গোলই সুয়ারেজকে একলাফে গোলদাতার তালিকার শীর্ষে নিয়ে এসেছে। তার মোট গোল পাঁচ। তিন গোল করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আর্জেন্টিনা গঞ্জালো হিগুয়াইন।

No comments

Powered by Blogger.