চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ ছাত্ররাজনীতি স্থগিত-ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় আহত আবিদ শুক্রবার রাতে হাসপাতালে মারা যান

ট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে কলেজের ছাত্র সংসদ ও ছাত্ররাজনীতি। গত শুক্রবার রাতে একাডেমিক কাউন্সিলে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শনিবার সকালে কলেজের পাঁচটি ছাত্র ও ছাত্রী হল ছেড়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বিডিএস কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবিদুর রহমানের মৃত্যুর পর অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।


চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্র সংসদের কয়েকজন নেতা-কর্মী গত বুধবার অমানুষিক নির্যাতন চালান আবিদুর রহমানের ওপর। গুরুতর অবস্থায় রাতে তাঁকে প্রথমে চমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে এবং পরে নগরীর কাতালগঞ্জে বেসরকারি একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে আবার চমেক হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে ঢাকায় এ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অভিভাবকরা। তাঁকে আইসিইউ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয়। এ সময় অবস্থার আরো অবনতি হলে দ্রুত সিসিইউতে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৮টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবিদুর মারা যান।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চমেক একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক বসে। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা ছাড়াও এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের চারজন করে আটজন প্রতিনিধি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে কলেজ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ, ছাত্র সংসদ ও ছাত্ররাজনীতি স্থগিত এবং শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে সব হল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঘটনা তদন্ত করে অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ হল ও ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। এসব সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করে অধ্যক্ষ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ঘটনায় জড়িতরা যাতে রেহাই না পায় সে জন্য তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাটি কেউ যাতে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তার চিকিৎসাসেবায় গাফিলতি ছিল না। সকালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামের বাড়ি চকরিয়ায় নিয়ে গেছেন পরিবারের সদস্যরা।'
পাঁচলাইশ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা সেকেন্ড অফিসার আতাউর রহমান বলেন, 'আমরা যতটুকু শুনেছি, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আবিদুর মারা গেছে। এখনো থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, লাশ দাফনের পর তাঁরা থানায় আসবেন। পুলিশ নিজ উদ্যোগে বিষয়টি তদন্ত করছে। কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।'

No comments

Powered by Blogger.